বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, বেকারত্ব ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যতম বড় সমস্যা। আমরা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে বেকারত্ব দূর করতে চাই। পাশাপাশি সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদামুক্ত একটি সুন্দর ঠাকুরগাঁও গড়ে তুলতে চাই, যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর মাদ্রাসা মাঠে জামায়াতে ইসলামী ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার আয়োজনে এক জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমাদের এলাকার একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। একসময় তিনি মন্ত্রী ছিলেন। আমি তার ছাত্র হিসেবে তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করি। তবে তিনি ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের, আমরা ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শ অনুসরণ করি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার আছে। তাই ভোটের মাঠে সবাই নিজ নিজ দলকে জেতানোর চেষ্টা করবে, আর আমরা রাজনৈতিক সৌজন্য বজায় রেখে আমাদের অবস্থান ধরে রাখব।
ঠাকুরগাঁওয়ে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, আমরাও শুনেছি, এখানে নিরপরাধ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে থানায় নেওয়া হয়, পরে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার ও ওসির সঙ্গে কথা বলেছি, আজ জেলা প্রশাসকের সঙ্গেও কথা বলব। আমরা চাই, অপরাধীরা আইনের আওতায় আসুক, কিন্তু নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার এ সদস্য বলেন, যারা দীর্ঘ ১৫ বছর মানুষকে নির্যাতন করেছে, হত্যা করেছে, ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়েছে, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিত। কিন্তু সাধারণ মানুষ যেন মিথ্যা মামলার শিকার না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা এ বিষয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রয়োজনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।
ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা বলেন, গত ১৫ বছরে মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেনি। ভয়ভীতি দেখিয়ে অনেককে বাসা থেকে বের হতেও দেওয়া হয়নি। এবার আমরা আশাবাদী, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা চাই, জনগণ যেন ভয়ভীতির বাইরে থেকে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের জন্য ইফতার ও বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ২০০টি পরিবারের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ১৬টি পরিবারকে ছাগল, একটি পরিবারকে গরু, পাঁচটি পরিবারে টিউবওয়েল এবং পাঁচটি মসজিদে মাসব্যাপী ইফতার আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যক্ষ বেলাল উদ্দিন প্রধান, সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও সহকারী সেক্রেটারি কফিল উদ্দিন আহমেদ।
মন্তব্য করুন