পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকরা। চমেকে রোগী ও তার স্বজনরা চিকিৎসাসেবায় সাধারণত স্থায়ী চিকিৎসক ছাড়া ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর নির্ভর করে। ওয়ার্ডগুলোতে স্থায়ী চিকিৎসকদের পাশাপাশি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেবা দিয়ে থাকেন। রোগীর কাছাকাছি থাকেন তারা। কিন্তু তাদের পাঁচ দফা দাবির মুখে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।
এখন ডাকাডাকি করেও সহজে চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, স্থায়ী চিকিৎসকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগে উচ্চতর কোর্সে অধ্যয়নরত চিকিৎসকরা যথাসম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
মূলত এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কাউকে চিকিৎসকের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেয় ইন্টার্ন চিকিৎসক। সোমবার (২৪ ফ্রেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এদিনে তারা কাজে যোগ দেননি। দেশের অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলোতেও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এ কর্মবিরতি চলছে। সেই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে টানা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, পাঁচ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলছে চমেক শিক্ষার্থীদের। রোববার থেকে তারা শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে তারা যৌথভাবে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। ওই সমাবেশ থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
রোগীর স্বনেরা জানান, হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের স্থায়ী চিকিৎসকদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আজকেও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে যোগ দেননি। রোগীদের সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।
চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক আহমদ হাসবাইন বলেন, দ্বিতীয় দিনের মতো টানা কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। অন্যান্য মেডিকেল কলেজগুলোর ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। যদি কেন্দ্রীয়ভাবে নতুন কোনো কর্মসূচি বা সিদ্ধান্ত আসে তাহলে তা পালন করা হবে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সারা দেশের মতো এখানে ধর্মঘট করছেন। আমাদের স্থায়ী চিকিৎসকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগে উচ্চতর কোর্সে অধ্যয়নরত চিকিৎসকরা যথাসম্ভব সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারী ব্যক্তিদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে। এই নিবন্ধন দেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
মন্তব্য করুন