মাদারীপুরের কালকিনিতে বিএনপির ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এমনকি যারা মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তারা বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। এ নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্থানীয় জনগণের ব্যানারে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাহেবরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম মুরাদের পক্ষে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাহবুবুর রহিম মুরাদ কালকিনি উপজেলা যুবলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তবে এ কমিটি জেলা যুবলীগ থেকে অনুমোদিত নয়। মুরাদ দীর্ঘদিন সাহেবরামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ২০২১ সালে নৌকার বিপক্ষে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সমাবেশে অংশগ্রহণ করে জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন। এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি মুরাদের প্রতিপক্ষের লোকজন ফেসবুকে লেখালেখি করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সাহেবরামপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও স্থানীয় জনগণের ব্যানারে একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে মুরাদের সমর্থকরা।
একাধিক প্রতক্ষ্যদর্শী জানান, মানববন্ধন করেছে বিএনপির ব্যানারে অথচ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাহেবরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কালাম আকন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল আকন, ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আহসানসহ অনেকেই। এতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে। আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা এবং স্থানীয় কর্মীরা এ মানববন্ধনে অংশ নিলেও বিএনপির ব্যানার ব্যবহার করায় তারা এর প্রতিবাদ জানান।
কালকিনি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম মুরাদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই এ অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। এখন আর আওয়ামী লীগ দিয়ে মানববন্ধন সম্ভব না, তাই বিএনপির লোকজন দিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।
কালকিনি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বলেন, সাহেবরামপুর ইউনিয়নে ছাত্রদলের কোনো কমিটি নেই। যারা এ মানববন্ধন করেছে তারা ছাত্রদলের নেতাকর্মী হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কালকিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বেপারী বলেন, কালকিনি উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চেয়ারম্যান। তার পক্ষে বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের মানববন্ধন করার সুযোগ নেই। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে একটি কুচক্রী মহল বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এ কাজ করেছে। যারা করেছে তারা আওয়ামী লীগের দোসর। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
মন্তব্য করুন