বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমরা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করে শোষণমুক্ত বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। আমরা যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম, সেসব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানাই নিজেদের মধ্যে ছোট বিষয় নিয়ে বিশৃঙ্খলা আমরা বাদ দিই।
তিনি বলেন, নিজেরা মিলেমিশে আমরা একটা ভোট দিই। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে। জামায়াতে ইসলামীর ব্যপারে আমরা বলতে পারি কোনো দিন ভোট ডাকাতি করতে পারি না, ও বিদ্যা আমাদের নেই। নির্বাচনের আগে সংস্কার করতে হবে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) খুলনার ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় বেজেরডাঙ্গা আকিজ মাহফিল মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, খুনিদের মাস্টারমাইন্ড হলো শেখ হাসিনা। ৫ আগস্ট কোটি কোটি মানুষের উত্তাল আন্দোলনে ভীত হয়ে গণভবন থেকে শেখ রেহেনাকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেল। যেখানকার মাল সেখানে চলে গেছে। ভিডিও ও অনলাইনে দেখি উনি আবার মাঝে মাঝে আসতে চায়। তা এসে পড়েন, আমরা গেট সাজিয়ে রেডি আছি।
তিনি বলেন, নিরীহ নিরপরাধ সোনার সন্তানদের যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে। একটি মিথ্যা ট্রাইব্যুনাল বানিয়ে আমাদের লোকদের ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালে এখন তোমাদের বিচারের আয়োজন চলছে। ২ শতাধিক মামলা হয়েছে শেখ হাসিনার নামে। ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারি হয়েছে, ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। আমরা দাবি করেছি শেখ হাসিনাসহ তাদের দেশে ফিরিয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের আশি ঊর্ধ্ব বয়স। ১৪টি বছর ফাঁসির সেলে রোগে শোকে তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। হাসিনার আমল তো শেষ। তার আমলের যত মিথ্যা মামলা বাতিল করে আহজার ভাইকে মুক্তি দাও। আমরা ঘোষণা করেছি মুক্তি চাই, দিতে হবে।
তিনি বলেন, আদালতের মারপ্যাচ আমরা বুঝি না। ৫ আগস্টের একদিন পর বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু সাড়ে ৬ মাস পরও আমার নেতা আজহারকে কেন মুক্তি দেওয়া হবে না। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামের পক্ষ থেকে গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে নই। আমরা জুলুমের বিপক্ষে। আমরা মজলুম, আমাদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। এই মজলুমের কান্নার জন্য আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করব। লাখ লাখ মানুষ যাবে। আমিরে জামায়াত সেখানে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবে।
ফুলতলা ইউনিয়ন আমির মাস্টার মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর খুলনা জেলার সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, ফুলতলা উপজেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল আলিম মোল্যা, নায়েবে আমির মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল হাসান খান ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সেক্রেটারি আলী আকবর মোড়ল।
মন্তব্য করুন