বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্টরা এ দেশের সাড়ে ৪ হাজারের বেশি মানুষকে বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মেধা ও মনন মঞ্চ বির্তক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, আপনারা জানেন ২০০৭ সালের পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক শক্তির নীলনকশা জেঁকে বসেছিল। বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্টরা আমাদের মাঝে থেকে সাতশর বেশি মানুষকে গুম করেছে। তারা আমার-আপনার মতো কারও ভাই, কারও বোন, কারও মা, কারও স্বামী, কারও বাবা। সাড়ে ৪ হাজারের বেশি মানুষকে বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তারা আমার-আপনার ভাই, সহযোদ্ধা, আত্মীয়-স্বজন ছিলেন। তাদের অপরাধ ছিল তারা কথা বলতে চেয়েছিলেন। তারা মেধা ও মননের মতো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার চেয়েছিলেন। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব- সেই স্লোগান তুলেছিলেন, সেই স্লোগানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এমন সাড়ে ৪ হাজারের মতো আমাদের সহযোদ্ধাকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শুধু বিএনপি বলেছে, বিগত ১৫ বছরে দলটির ৬০ লাখের বেশি নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলা করে হয়েছিল। আমরা সেই অবস্থার পরিবর্তন চেয়ে বিগত ১৫ বছর ধরে অতন্দ্র প্রহরীর মতো রাজপথ পাহারা দিয়েছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমাদের সেই নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের মুখচ্ছবি ধারণ করে বৈষম্যের বিরুদ্ধে যখন রুখে দাঁড়িয়েছে তখন পাখির মতো গুলি করে প্রায় ২ হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। অগণিত অসংখ্য মানুষকে আহত করা হয়েছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা জুলাই বিপ্লব সংগঠিত করেছি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ দেশের মানুষ ছাত্রদের পেছনে অবস্থান নিয়েছিলেন। যারা আপনাদের মতো তরুণ ছিলেন, আপনাদের বন্ধু-সহযোদ্ধা ছিলেন। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা জুলাই বিপ্লব পেয়েছি। মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের জুলাই বিপ্লব ভূলুণ্ঠিত হতে দিতে পারি না।
অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস, শৈলকুপা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী, মেধা ও মনন মঞ্চের সভাপতি সাদিয়া সুলতানাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
‘কেবল শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগই টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে’ শীর্ষক বির্তক প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড ফাইনালে শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কাঁচেরকোল মরিয়ম নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অংশ নেয়। এছাড়াও মাসব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় শৈলকুপা উপজেলার ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
মন্তব্য করুন