টঙ্গীর তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছাত্র ও শিবির নেতা ফজলে রাব্বিকে মারধরের ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় জুনায়েদ আহম্মেদ মামুন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামুন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার রসুলপুরের মাওলানা হযরত আলীর ছেলে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) টঙ্গী পূর্ব থানা সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি (১৮)। তিনি টঙ্গী তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওয়ার্ড সভাপতি। বৃহস্পতিবার কুয়েটের ঘটনা নিয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে জুনায়েদ আহম্মেদ মামুন (১৮) রাব্বীকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। এ ঘটনায় আহত রাব্বী বাদী হয়ে আটজনকে শনাক্ত ও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। এই মামলার প্রধান আসামি মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- সামি শিকদার (১৮), সাজ্জাদ (১৮), নাহিয়ান (১৮), রাশেদ আহম্মেদ (২০), নাবিউল (১৮) ও মাহফুজ (১৮)।
আহত ফজলে রাব্বি জানান, তার সহপাঠী ছাত্রদল কর্মী জুনায়েদ আহম্মেদ মামুন ওরফে ভূইয়া মামুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ফোনে ও ম্যাসেঞ্জারে তাকে মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশের সিএনজি পাম্পে যেতে বলে। সে যেতে রাজি না হলে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। এতে পরবর্তী সময়ে ঝামেলা হতে পারে এই ভয়ে অবশেষে সে সেখানে যেতে বাধ্য হয়। পাম্পে যাওয়ার পর সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান নেওয়া ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী তাকে টানাহেঁচড়া করে মহাসড়কের পূর্ব পাশে বাঁশপট্টিতে নিয়ে যায়। সেখানে বাঁশের একটি ঘরে তাকে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখে মারধর করে এবং হাতে সিগারেট ধরিয়ে দিয়ে শিবির করে না মর্মে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়। এরপর তার পরিবারের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এ সময় তাকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করলে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ছাত্রদল কর্মীরা পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় জনতা ছাত্রদল কর্মী মামুনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে এবং আহত ফজলে রাব্বিকে উদ্ধার করে টঙ্গী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় রাতেই ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ও মিল্লাত মাদ্রাসার সাবেক শিবির নেতারা থানায় যান। রাত সাড়ে ১১টায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি এইচএম আবু জাফর, গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রোহানুজ্জামান শুক্কুর ও সাধারণ সম্পাদক মিরণের নেতৃত্বে ছাত্রদলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানায় যান। এ ঘটনায় তামীরুল মিল্লাতের ছাত্ররা মহাসড়কে বিক্ষোভ করে।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রোহানুজ্জামান শুক্কুর বলেন, যারা এ ঘটনায় জড়িত তারা ছাত্রদলের কেউ না। এ ঘটনায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাত্রদলকে জড়ানো হচ্ছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান জানান, কুয়েটের ঘটনার প্রতিবাদে ফজলে রাব্বি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তার কয়েক সহপাঠী তাকে ডেকে নিয়ে হামলা চালায়। স্থানীয়রা একজনকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। ঘটনাস্থল টঙ্গী পূর্ব থানায় হওয়ায় পরে ভিকটিমসহ আসামিকে আমাদের গাড়িতে করে পূর্ব থানায় পাঠানো হয়।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন