সাগর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে প্রতিবাদ করায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মারধর করে সাগরে ফেলে দেওয়া সেই জেলে রামদাসের (৩২) মরদেহ ৪ দিন পর উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ। উদ্ধার হওয়া জেলের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মুরাদপুর ইউনিয়নের সাগর উপকূলে গুলিয়াখালী খালের পাশ থেকে ওই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নৌপুলিশ ও রামদাসের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রামদাস ও লিটন দাস সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। এ সময় সমুদ্র থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে তাদের জাল ছিঁড়ে যায়। এ সময় ড্রেজারে উঠে প্রতিবাদ করতে যাই রামদাস ও লিটন দাস। বালু উত্তোলনকারীরা ওই সময় ড্রেজার থেকে রামদাসকে মারধর করে সমুদ্র ফেলে দেয়। রামদাস নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তাকে খুঁজে পেতে প্রতিদিন নৌপুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। কিন্তু আজ (শুক্রবার) সকালে গুলিয়াখালী সমুদ্র উপকূলে খালের পাশে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এ সময় স্থানীয়রা নৌপুলিশকে খবর দিলে গাউছিয়া কমিটির সহযোগিতায় তারা মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
রামদাসের ভাই প্রেমদাস বলেন, সমুদ্রে মাছ শিকার করেই চলে জেলেদের জীবন। বালু উত্তোলনকারীদের কারণে সেই জেলেরা আজ কোণঠাসা। বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অনেক প্রতিবাদ করেছি। আমাদের প্রতিবাদের ভাষা রাষ্ট্রের কানে যায় না। যার কারণে বলি হতে হলো রামদাসকে। বিধবা হলো আমার বৌদি (ভাবি)। বাবার আদর থেকে চিরতরে বঞ্চিত হলো আমার পাঁচ বছরের ভাইজি পল্লবী দাস।
সীতাকুণ্ড নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওয়ালিউদ্দিন বলেন, রামদাস নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য নৌপুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। কিন্তু সকালে একটি মরদেহটি গুলিয়াখালী সমুদ্র উপকূলে ভাসতে দেখে খবর পায়। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি রামদাসের বলে শনাক্ত করি। রামদাসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন