সম্প্রতি বরগুনার বেতাগীতে একদিনে কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের স্বজনরা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কিন্তু হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় রোগীদের। ফার্মেসি থেকে উচ্চমূল্যে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মোকামিয়া ও বেতাগী পৌরসভা এলাকায় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত তিন পথচারীকে কামড় দেয় কুকুর। বিকেল পর্যন্ত সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় পাঁচজনে।
এখানেই শেষ নয়। এ উপজেলায় প্রতি মাসে গড়ে ৩০ জন নানাভাবে বিড়াল ও কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কুকুরের কামড়ে আহত কমপক্ষে ১৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন না থাকায় পরে তাদের বরগুনা, পটুয়াখালী ও বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কুকুরের কামড়ে আহতের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা. মোবাশ্বের বলেন, গত সোমবার সকালে থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনজন কুকুরে কামড়ানো রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভ্যাকসিন নিতে বাইরে পাঠানো হয়েছে।
বেতাগী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে খেলতে গিয়ে কুকুরের কামড়ে আহত হয় ৬ বছরের ফাতিমা বেগম। তার বাবা শফিকুল ইসলাম সবুজ জানান, সালেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এলাকায় তার মেয়েকে আহত করে কুকুর। কিন্তু হাসপাতালে ভ্যাকসিনের অভাবে ফার্মেসি থেকে ১ হাজার টাকায় কিনে প্রথমটি দিয়েছি।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আহত নারগিস বেগম বলেন, বাইরে থেকে কাজ শেষ করে ঘরে ঢুকে মাত্র খাটে বসছিলাম। এরই মধ্যে দৌড়ে এসে একটি বিড়াল হাতে কামড় দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। কিন্তু সেখানে ভ্যাকসিন না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরে ২ হাজার টাকায় ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে দিই। এখনো একটি বাকি রয়েছে। সব ফার্মেসিতেও পাওয়া যায় না।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ মুহাম্মদ আমরুল্লাহ মোবাইল ফোনে কালবেলাকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ। আশা করছি, ২ মাসের মধ্যে পেয়ে যাব। দ্রুত ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. বশির গাজী বলেন, এরই মধ্যে বিষয়টি জানতে পেরেছি। কুকুরের উপদ্রব রোধ ও স্থানীয়ভাবে দ্রুত ভ্যাকসিন ক্রয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কুকুরের কামড়ে আহত শাহজাহান মিয়া বলেন, পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুড়ের উপদ্রব বেড়ে গেছে। আমরা এককথায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। আবার হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকায় ফার্মেসি থেকে বেশি দামে কিনে দিতে হচ্ছে। অসহায় ও গরিব রোগীরা সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন।
মন্তব্য করুন