সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার সামনে বিক্ষোভ এবং মশাল মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক। জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণহত্যার সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত অপরাধীদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা এবং চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে আশুলিয়া থানার প্রধান ফটকে সাভার-আশুলিয়ার ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।
পরে থানার গেইটে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা বলেন, সম্প্রতি সময়ে আশুলিয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে। এ ছাড়া গণহত্যার সঙ্গে জড়িত রাঘব বোয়ালদের গ্রেপ্তার না করে চুনোপুটিদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। একইসঙ্গে আশুলিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে তাদের সতর্ক করে হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভরতরা।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা জেলা শিল্পাঞ্চল কমিটির সভাপতি অরবিন্দু বেপারী বিন্দু বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করায় গণবিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং উপস্থিত ছাত্র-জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ শ্রমিক নেতা তার বক্তব্যে আরও বলেন, গোটা আশুলিয়া জুড়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে। এসব অপরাধের প্রতিকার এবং এ বিষয়গুলো আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবগত করতেই আমরা আজকে এখানে সমবেত হয়েছি। গত কয়েকদিন আগে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদন এবং সাধারণ মানুষের তথ্য অনুযায়ী এ আশুলিয়া থানায় পুলিশের অসাধু কর্মকর্তারা মামলা বাণিজ্য করছে। তারা নামে বেনামে মামলা সাজিয়ে মানুষকে হয়রানি করছে এবং ঘুষ বাণিজ্য করছে।
অরবিন্দু বেপারি আরও বলেন, আমরা চাই না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গোটা জাতির কাছে দেশের পুলিশ বাহিনী যে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে, পুলিশের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ করেছে সেটি আর অব্যাহত থাকুক। আশুলিয়াবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের যেকোনো প্রয়োজনে আমরা থানা পুলিশকে সহযোগিতা করবো। আমরা চাই না এখানে প্রশাসনের কোন সুবিধাবাদী লোকজন ঝামেলা পাকাবে এবং চাঁদাবাজি করবে আর স্বৈরাচারের দোসররা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবে।
আশুলিয়ার ওসিকে উদ্দেশ করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বলেন, স্বৈরাচারের দোসরা, ১৪ দলের অনুসারীরা, যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে কোনো রকমের ছাড় না দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তার করুন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমরা যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম প্রয়োজনে এখন স্বৈরাচারের দোসরদের আইনের আওতায় আনতে আমাদের সহযোগিতা চাওয়া হলে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি। পুনরায় কোনো রকমের মামলা বাণিজ্যের বিষয় যদি আমাদের নজরে আসে তাহলে আমরা ছাত্র-জনতা ও শ্রমিক বড় ধরনের আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
মামলা বাণিজ্যের অভিযোগের বিষয়ে জানতে আশুলিয়া থানার ওসি নুর আলম সিদ্দীককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তার কোন জবাব দেননি।
মন্তব্য করুন