আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, আল্লাহর কাছে বলেছিলাম শেখ হাসিনার পতন না দেখিয়ে আমাকে মৃত্যু দিও না। আল্লাহ আমার কথা শুনেছে। আওয়ামী লীগের ‘আ’ লিখতে ১০ বছর লাগবে।
তিনি বলেন, আমি কিশোরগঞ্জে গত পৌরসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম একদিন এমন সময় আসবে যেদিন গেইটে-গেইটে লেখা থাকবে এই এলাকায় আওয়ামী লীগ বসবাস করে না। তাই হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়ামে দ্রব্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার ও দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাড. ফজলুর রহমান বলেন, ভারত সরকার যা করেছে আমরা কিছুতেই তাদের সমর্থন করতে পারি না। শেখ হাসিনাকে তারা অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় রাখার চেষ্টা করেছে। ভারত যদি আমাকে ভাই ডাকে তাহলে তাকে আমি দাদা ডাকবো। ভারত যদি আমাদের বন্ধু ডাকে তাহলে তাদের বন্ধু ডাকবো। যত চক্রান্ত হচ্ছে সেই চক্রান্ত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য বিএনপির নেতৃত্বে আমাদের সংগ্রাম চলবে।
তিনি বলেন, প্রথমে প্রধানমন্ত্রী পরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। বিএনপিকে লাল চোখ দেখান? ১৮ বছর বিএনপির ডানার নিচে লুকিয়ে ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শাড়ির আঁচল দিয়ে সন্তানের মতো লুকিয়ে রেখেছিল। এখন একটু সুযোগ পেয়েছেন আর এই জন্য স্লোগান দেন নৌকা আর ধানের শীষ দুই সাপের একই বিষ। আপনারা’তো মোনাফেক। ১৮ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ তারা সিদ্ধান্ত নিবে। চক্রান্ত করবেন না। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে বিএনপি দুই তৃতীয়াংশের উপরে ভোট পাবে। সেই দলকে আপনারা চক্রান্ত করে বঞ্চিত করতে চান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে যারা এই দেশকে আবার নতুন করে পাকিস্তানের পথে নিয়ে যেতে চাই তাদের চরিত্রের পরিবর্তন হয় নাই। যারা মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করে না তাদের সাথে আমাদের কোনো ঐক্য নাই। আমরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ চাই। জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ চাই। বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাংলাদেশ চাই। সেই বাংলাদেশ চাই বলে আমরা আগামী দিনে নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ধৈর্যের দ্বার গণতন্ত্রের মাধ্যমে খুলতে চাই। সেই গণতন্ত্র বাংলাদেশে কায়েম করবো। এই দেশ হবে সকলের। কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। এখানে সংস্কৃতি থাকবে, ধর্ম থাকবে। সবাই একসাথে বসে যার যার আদর্শ পালন করবো।
বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই উল্লেখ করে ফজলুর রহমান বলেন, জামায়াত ইসলামীকে আমি শত্রু মনে করি না। কোনো দলকে আমি শত্রু মনে করি না। কিন্তু যদি ওই আইয়ুব খানের মতো, হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদের মতো বাহানা করে জটিল পথে কঠিন পথে নির্বাচনকে ধ্বংস করতে চাই তাহলে বিএনপি কাউকে ছাড়বে না। বিএনপির সঙ্গে ৯০ পার্সেন্ট গণতান্ত্রিক দল বিএনপির কথা জাতীয় নির্বাচন চাই। কিছুতেই দীর্ঘায়িত হতে দিবো না। আমরা বর্তমান সরকারকে বিশ্বাস করতে চাই। সেই বিশ্বাসের খেয়ানত করবেন না।
জনসভায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিসেস লায়লা বেগম, শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু, অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, রুহুল হোসাইন, অ্যাড. জালাল মুহাম্মদ গাউস, অ্যাড. জালাল উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, আমিনুল ইসলাম আশফাক, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাজুল ইসলাম চপল, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবু নাসের সুমন, সদস্যসচিব শহীদুল্লাহ কায়সার, ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহম্মেদ নেভীনসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন