ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় সদ্য নিয়োগ পাওয়া ওসিকে আওয়ামী লীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশ কয়েকজন নেতাদের নিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা উপজেলা শাখার নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক আনিচুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা শাখার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এর আগে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ভাঙ্গা থানায় এ ঘটনা ঘটে। এ সংক্রান্ত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিরু মাতুব্বরের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি ভাঙ্গা থানায় নবনিযুক্ত ওসি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে তার অফিসে শুভেচ্ছা জানায় গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা শাখা। এ সময় যুগ্ম সদস্য সচিব করিম শরীফ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর মো. মিরু মাতুব্বরের সঙ্গে ছবি তোলেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়।
ভাঙা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আনিস তাকে জানান, ওই দুই নেতা আগে আওয়ামী লীগ করত। তারা গণঅধিকার পরিষদে নতুন যোগ দিয়েছেন। এখানে সবে যোগ দিয়েছে, তাই সবাইকে ঠিকমতো চিনি না।’
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, ওসির সঙ্গে সাক্ষাতের আগে থানা ফটকে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মো. আনিচুর রহমান ও সদস্য সচিব মো. আতিকুল্লাহ্ হেলালসহ নেতাকর্মীরা ছবি তুলছেন। এরপর ওসিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান তারা। এ সময় ওসির পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক মিরু মাতুব্বর ও পৌর আওয়ামী লীগ নেতা বিপুল মুন্সী। এ ছাড়াও আরেকটি ছবিতে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে ছবিও দেখা যায়।
মিরু মাতুব্বর কালবেলাকে জানান, আমরা কৃষি কাজ করা লোক, ২০১৪ সালে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ছিলাম মৌখিকভাবে, কোনো কাগজ-কলমে না, ৫ আগস্টের পর গণ অধিকার পরিষদ নিবন্ধন পেলে গণঅধিকারের আহ্বায়ক আনিস ভাই, আমাকে ভাঙ্গা পৌর সভাপতি করার জন্য ফরিদপুর জেলার অন্যান্য উপজেলায় আমাকে নিয়ে মিটিং করেছে। কেন্দ্রে পর্যন্ত আমাকে নিয়ে নূর ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। ওসি স্যারকে আমিও চিনি না আমাকে ফুল দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে আনিস ভাই নিজে বাঁচার জন্য আমাকে প্রেস ব্রিফিং করে আমি দলের কেউ নয় বলে ফাঁসিয়েছেন। এটা দুঃখজনক, আমি তো অন্যায় করি নাই এবং কোনো চুরিও করি নাই।
বিপুল মুন্সি জানান, আমরা সক্রিয় কোনো রাজনীতিতে জড়িত নই। তবে ভাঙ্গা ৯০% আওয়ামী লীগের এলাকা আমি একজন পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে ছিলাম। ভাঙ্গায় গিয়েছি তখন আনিস আমার বন্ধু ছোট ভাই সেই হিসেবে আমাকে ওসি স্যারকে শুভেচ্ছা জানাতে লোক বাড়ানোর জন্য নিয়েছে। আমরা নিরিবিলি থাকা লোক।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শিকদার সাইদুর রহমান মিঠু বলেন, ‘মিরু মাতুব্বর ও বিপুল মুন্সি সাবেক এমপি নিক্সন কর্মী ছিলেন।’
মন্তব্য করুন