রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার ৭৩ ও স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার ১৪৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৯টি প্রতিষ্ঠানেই নেই কোনো শহীদ মিনার। এতে করে পল্লী অঞ্চলের কোমলমতি শিশু ও তরুণ ছাত্র-ছাত্রীরা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
দেখা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি এলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাঁশ আর কলাগাছ দিয়ে একটি শহীদ মিনার বানিয়ে ভাষাশহীদদের স্মরণ করে।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলায় মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪৪টি। এর মধ্যে কলেজ ২টি, ডিগ্রি কলেজ ১টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫টি, দাখিল মাদরাসা ৭টি, আলিম ৫টি, ফাজিল ২টি, কামিল ১টি। প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১০টি। যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেগুলোও বছরজুড়ে অযত্ন-অবহেলায় এবং অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরসহ অন্যান্য জাতীয় দিবস শুধু পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে পালন করা হয়।
এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহীদ মিনার না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার প্রত্যন্ত এলাকার অনেক শিক্ষার্থী ভাষা আন্দোলন ও শহীদ দিবস সম্পর্কে জানেই না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জুয়েল বলেন, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। শিক্ষার্থীদের ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে শহীদ মিনার অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তাই তা নির্মাণে শিক্ষা প্রশাসন, অভিভাবক ও স্থানীয় বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. এনায়েতুর রহমান বলেন, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার প্রয়োজন। তাই উপজেলায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো তা নির্মাণ করা হয়নি, এ বছর সে সব প্রতিষ্ঠানে পিইডিপি-৫ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অঃদাঃ) মো. রেজাউল করিম বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারি কোনো তহবিল নেই। তবে ভাষাশহীদদের প্রতি যথার্থ মর্যাদা দিতে হলে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ জরুরি।
মন্তব্য করুন