চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ছাত্রীর মায়ের পরকীয়া সম্পর্কের ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ায় গৃহশিক্ষক মাসুদ হাসান রঞ্জুকে খুন করা হয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন ছাত্রীর মায়ের পরকীয়া প্রেমিক হুমায়ুন কবির।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গ্রেপ্তার হুমায়ুন কবির। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গৃহবধূ শাহানাজ সুলতানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হুমায়ুন কবিরের। নিহত মাসুদ হাসান ছিলেন শাহানাজ সুলতানার বাড়ির গৃহশিক্ষক। তিনি বদনপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, মাসুদ হাসান রঞ্জু এলাকার মিজানুর রহমানের মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতেন৷ এরই মধ্যে বুঝতে পারেন মিজানুরের স্ত্রী অর্থাৎ ছাত্রীর মা শাহানাজ সুলতানার সঙ্গে এলাকার হুমায়ুন কবিরের পরকীয়ার সম্পর্ক চলছে৷ বিশেষ কায়দায় শাহানাজ ও হুমায়ুন কবিরের মধ্যে কখন কি কথা হয়, সে বিষয়টি মাসুদ জেনে যেত। তাদের মোবাইল ফোনে কথা বলার বিষয়টি শাহানাজের স্বামী মিজানুর রহমান স্থানীয় লোকজনকে জানায়।
পুলিশের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত পরকীয়া প্রেমিক হুমায়ুন কবির জানান, হত্যার ৫/৬ দিন পূর্বে রাতে শাহানাজ আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে বলে যে, রঞ্জু আমাদের কথাবার্তা রেকর্ড করে রাখছে। তাকে মেরে ফেলতে হবে, আমি বলি ঠিক আছে, মেরে ফেলব। সে আরও বলে- মারতে পারলে, আমার সঙ্গে কথা বলবা। না পারলে কথা বলবা না। ওই কারণে আমি রঞ্জুকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করি।
পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দুয়েক দিন আগে আমি মাসুদকে বলি, আমি রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দেব। তখন মাসুদ বলে যে, আমিও আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দেব। সে মোতাবেক রোববার সকাল ৯টার দিকে আমি আমার ভুট্টা ক্ষেতে পানি দিতে যাই এবং মাসুদও তার জমিতে পানি দেওয়ার জন্য আসে।
হুমায়ুন কবির আরও জানান, আমার জমিতে পানি দেওয়া শেষে দুপুর ১২টার দিকে মাসুদ তার জমিতে পানি দেওয়া শুরু করে। এ সময় আমি মাসুদের পেছনে পেছনে ভুট্টা ক্ষেতের ভেতরে গিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক কোদাল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করি। এতে সে মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে আমি তাকে দুটি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে কোদাল ক্যানেলের মধ্যে রেখে বাড়ি চলে আসি।
এদিকে ঘটনার পরদিন নিহত মাসুদের পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করে। এ মামলায় হুমায়ুন কবির ও শাহানাজ সুলতানাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন