বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সব আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে আলোচনা শুরু করতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তিস্তা রক্ষায় ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির সমাপনী দিনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিস্তার পানির হিস্যা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে এ কর্মসূচি পালন করছে তিস্তাপাড়ের মানুষ।
তারেক রহমান আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি পানির ন্যায্য হিস্যা না দেয় বা দিতে যদি দেরি করে কিংবা চুক্তি করতে অনীহা দেখায়, তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমাদের বাঁচার পথ খুঁজে নিতে হবে। এজন্য দেশি ও আন্তর্জাতিকভাবে সফল সম্ভাব্য বিকল্পগুলো কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলে পানির ন্যায্য হিস্যাবঞ্চিত মানুষরা আজকে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চায়, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি কোনো করুণার বিষয় না। এটা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ও মানুষের প্রাপ। অথচ তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য বাংলাদেশ তথা উত্তরাঞ্চলের মানুষকে আন্দোলন করতে হচ্ছে।
দেশের নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণের উদ্যোগের অংশ হিসেবে কালক্ষেপণ না করে বাংলাদেশকে ১৯৯২ সালের ‘ওয়াটার কনভেনশন’ ও ’৯৭ সালের জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক উদ্যোগের পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলকে মরুকরণের হাত থেকে বাঁচাতে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই।’
ভারতের সমালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পানি বণ্টন নিয়ে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে অপ্রতিবেশীমূলক আচরণ করেই চলেছে। প্রায় ৫০ বছর হলো ফারাক্কার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পায়নি এখন আবার তিস্তা বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে আমাদের প্রতিবেশী উজানের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তার স্বাভাবিক পানিপ্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের এই অপ্রতিবেশীমূলক আচরণের কারণে উত্তরাঞ্চলের লাখো কোটি জনগণ বন্যায়-খরায় দুর্বিষহ জীবন পার করছে। তিস্তার বুকে ধু ধু বালুচর। একদিকে পানির অভাবে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল আবার হঠাৎ করে উজান থেকে ছেড়ে দেওয়া পানিতে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি, কৃষকের আবাদি ফসল বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ৫ আগস্টে একজন খুনি-স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে। এই স্বৈরাচার একবার বলেছিল ভারতকে যা দিয়েছি তারা সারাজীবন মনে রাখবে। ভারত শুধু স্বৈরাচারকে মনে রেখেছে, বাংলাদেশের জনগণকে তারা মনে রাখেনি। সেজন্য পানির ন্যায্য হিস্যাবঞ্চিত তিস্তাপাড়ের মানুষের মনে প্রশ্ন পলাতক স্বৈরাচারকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়া ভারত আর কিছু দেয়নি।’
বিএনপির রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্ব পেলে আগামী দিনে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সবরকমের উদ্যোগ গ্রহণের অঙ্গীকার জানান তিনি।
মন্তব্য করুন