রাজশাহী নগরীর বিলসিমলা এলাকার একটি বাড়িতে মাসুদ রানা নামের এক ব্যক্তি খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আলোচিত এ হত্যার জট খুলেছে।
এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন। তারা কেন, কীভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে সবকিছু স্বীকারও করেছেন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন মো. রানা (৩২) ও ও স্ত্রী মোসা. বেলি বেগম (৩০)। রানা রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের খোকন আলীর ছেলে ও তার স্ত্রী বেলী বেগম রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার শিরোইল কলোনি পশ্চিমপাড়ার মো. মেরাজ উদ্দিনের মেয়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর কর্ণহার থানার রাধানগর বেজুড়া গ্রামের মো. আবু বাক্কারের ছেলে মাসুদ রানা। সে প্রায় এক বছর ধরে নগরীর রাজপাড়া থানার নতুন বিল সিমলা এলাকার নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে একাই ভাড়া থাকতেন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ফুটপাতে চায়ের দোকান চালাতেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে তার ভাড়া বাসায় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নির্মমভাবে খুন হন। তার পিতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজপাড়া থানায় একটি হত্যার মামলা করা হয়। মামলা দায়েরের পর আরএমপির বোয়ালিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. হাফিজুর রহমানের তত্ত্বাবধানে রাজপাড়া থানা পুলিশের একটি টিম আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর থানার আলীপুর গ্রামে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি কাঠের পিঁড়া উদ্ধার করা হয়।
শনিবার রাজপাড়া থানা পুলিশ আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত দুই দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা জানান, নিহত মাসুদ রানার স্ত্রী ক্যানসারে মারা যাওয়ার পর তিনি একাই বাসায় থাকতেন। একা থাকার কারণে মাসদু রানার দোকানের কর্মচারী আসামি মো. রানা তার স্ত্রী বেলী বেগমকে সঙ্গে নিয়ে মাসুদ রানার সঙ্গে একই বাসায় থাকতে শুরু করেন। পরে মাসুদ রানার সঙ্গে আসামি বেলী বেগমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দোকান মালিকের সঙ্গে স্ত্রীর প্রেমের বিষয়টি জানতে পেরে দোকান কর্মচারী মো. রানা ক্ষুব্ধ হন।
এ নিয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির একপর্যায়ে মাসুদ রানাকে বেসিনের কাছে ফেলে মো. রানা কাঠের পিঁড়া দিয়ে আঘাত করে এবং বেলী বেগমের সহায়তায় তাকে হত্যা করে।
জানতে চাইলে আরএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুই আসামিকে সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ সময় তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
মন্তব্য করুন