শেখ মমিন, রাজবাড়ী
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গৃহবধূ জাসমার কেঁচো সারে ব্যাপক সাড়া

কেঁচো দিয়ে জৈবসার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করছেন জাসমা আক্তার। ছবি : কালবেলা
কেঁচো দিয়ে জৈবসার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করছেন জাসমা আক্তার। ছবি : কালবেলা

কিলবিল করা কেঁচো দিয়ে জৈবসার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন নারী উদ্যোক্তা জাসমা আক্তার। তিনি সার বিক্রি করে আয় করছেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। জাসমার ফার্ম প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে দেখতে ছুটে আসেন। আর যে কোনো পরামর্শ ও সহযোগিতায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নবুওছিমদ্দিনপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ জাসমা আক্তার। ২০২২ সালে বান্ধবীর খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাত্র ৩ কেজি কেঁচো দিয়ে জৈবসার বা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির যাত্রা শুরু করেন।

প্রথম দিকে মাসে ১০ থেকে ১২ কেজি জৈবসার উৎপাদন হলেও এখন প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ মণ জৈবসার প্রস্তুত করেন তিনি। উপজেলার সাধারণ কৃষকের আস্থা বর্তমানে জাসমার তৈরি ভার্মি কম্পোস্ট ও জৈবসার। তার খামারে একজন নারী ও একজন পুরুষ সার্বক্ষণিক কাজ করেন। আর জাসমার উৎপাদিত জৈবসার ফসলি জমিতে ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকরা। রাসায়নিক সারের তুলনায় দামে কম ও কার্যকারিতা বেশি হওয়ায় দিন দিন এই সারের চাহিদা বাড়ছে।

কেঁচো দিয়ে জৈবসার তৈরি করে জাসমা খাতুনের সংসারে এসেছে সচ্ছলতা। পেয়েছেন সেরা কৃষি উদ্যোক্তার পুরস্কার। তার উৎপাদিত স্বল্প মূল্যের গুণগত মানসম্মত সারের চাহিদা বাড়ছে স্থানীয় উপজেলাসহ অন্যান্য জেলাজুড়ে। তার উদ্যোগ ভার্মি কম্পোস্ট ও জৈবসার তৈরির মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে এনেছে এক নতুন সম্ভাবনা।

এদিকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে বৃহৎ পরিসরে খামারটি পরিচালনা করতে চান জাসমা আক্তার। বেকারত্ব দূর করে এলাকায় সৃষ্টি করতে চান আরও কর্মসংস্থানের। সরকার সহযোগিতা করলে তিনি ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যেতে চান। তার খামারে নতুন করে টাইকো কম্পোস্ট ও বায়োগ্যাস প্লান্টের উদ্যোগ নিতে চান তিনি। এই সার ব্যবহারে ফলন অধিক ভালো হয় বলে জানিয়েছেন কৃষক ও স্থানীয়রা। সচেতন মহল বলছে, তার এই উদ্যোগ পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে।

সবসময়ই স্ত্রীর পাশে থেকে সহযোগিতা করেন জাসমার স্বামী মাহবুবুল আজম। তিনি কালবেলাকে বলেন, প্রথম থেকেই তার পাশে ছিলাম, এখনো আছি। তিনটি হাউস দিয়ে শুরু করলেও এখন অনেক বড় হয়েছে। বর্তমানে কৃষকদের সাড়া বেশি পাচ্ছি। আগে প্রায় ১৫ মণের মতো উৎপাদন হচ্ছিল, এখন ৪০ থেকে ৫০ মণ উৎপাদন হচ্ছে। সরকারি সহায়তা পেলে আরও বড় পরিসরে আমরা উৎপাদন করতে পারব।

স্থানীয় কৃষক শামসুল আলম কালবেলাকে বলেন, জৈবসার আমাদের প্রচুর কাজে লাগছে। এই সার নিয়ে সবজি ক্ষেত করছি। অনেক উপকার পেয়েছি। রাসায়নিক সার বেশি দিলে জমির ক্ষতি হয়।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান কালবেলাকে জানান, কৃষি অফিসের মাধ্যমে আমরা বেশ কিছু নারী উদ্যোক্তা তৈরি করেছি। তার মধ্যে জাসমা নামে এক নারী অন্যতম। জাসমাকে আশ্বস্ত করেছি তার যতটুকু সার হবে পুরো সার কৃষি বিভাগ নিয়ে নেবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আটক ‘ডাকাতকে’ ছাড়িয়ে নিতে ছাত্রদল নেতার থানা ঘেরাও

লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিকের শিক্ষক সোবহানকে পুলিশে দিলেন শিক্ষার্থীরা

সীমান্তে আটক ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

ভিটামিন ‘ডি’ ঘাটতি ও প্রতিকার নিয়ে ভাবতে হবে এখনই

অতিরিক্ত দর্শনার্থী ঠেকাতে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে চালু হচ্ছে কার্ড

পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে আ.লীগ নেতার লাফ, অতঃপর...

আরব সাগরে যুদ্ধজাহাজ নিয়ে হাজির রাশিয়া-ইরান, আসছে চীন

ঢাকায় আজও বইছে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস

চোরাকারবারিদের ধরতে গিয়ে বিজিবি সদস্য নিহত

ধর্ষণের শিকার শিশুর ৯৭% ছবি-ভিডিও সরানো হয়েছে : বিটিআরসি

১০

খাল অবৈধ বাঁধমুক্ত করল স্থানীয়রা

১১

ইসরায়েলের প্রতি বিতৃষ্ণা, ফিলিস্তিন প্রেম বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে

১২

পুরুষের মাথায় বাড়ি দিয়ে হোলি উদযাপন

১৩

শাহবাগ নিয়ে হাসনাতের স্ট্যাটাস

১৪

দিন-দুপুরে সোনার বিপণিবিতানে ডাকাতি, ভিডিও ভাইরাল

১৫

১২ মার্চ : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

১৬

১২ মার্চ : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৭

‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে হাজারো সংস্কারে লাভ নেই’ 

১৮

মধ্যরাতে বরিশাল মহাসড়কে ঝরল দুই প্রাণ

১৯

মহাখালীর সাততলা বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে

২০
X