ছুরিকাঘাত করে স্ত্রীকে হত্যা করে নিজেই থানায় এসে অপরাধের কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেছেন স্বামী। হত্যা ও আত্মসমর্পণের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান।
নিহত গৃহবধূ আছমা আক্তার পুতুল (৩০) জেলার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের বকুলতলী এলাকার ইউনুসের মেয়ে। পুতুল পুবালি ব্যাংক বরগুনা শাখায় অফিস সহায়ক পদে কর্মরত ছিলেন।
স্বামী আবুল কালাম (৩৫) বরগুনা পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ স্মৃতি সড়কের বড়িয়াল পাড়া এলাকার আবদুল করিম আকনের ছেলে। পেশায় তিনি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী।
রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বরগুনা পৌর শহরের কলজে রোডস্থ বাগান বাড়ি এলাকায় জনৈক রাসেল মিয়ার ভাড়া বাসায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত ওই গৃহবধূর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
বরগুনা থানা সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবুল কালাম নামের ওই ব্যক্তি থানায় এসে তার স্ত্রী আসমা আক্তার পুতুলকে ধারাল ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি লেকের পানিতে ফেলে দিয়েছেন বলে জানান। তথ্যমতে আবুল কালামকে সাথে নিয়ে পৌর শহরের কলেজ রোডস্থ বাগানবাড়ী এলাকার জনৈক রাসেল মিয়ার ভাড়া বাসায় গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পুতুলকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক পুতুলকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত গৃহবধূ পুতুলের গালে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গভীর ক্ষতসহ মাথায় ও পেটে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পারিবারিক কলহের জেরেই এ হত্যা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
বাড়ির মালিক রাসেল মিয়া বলেন, পুতুলকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল দিয়ে পুলিশকে আমিও ঘটনার বিষয় জানিয়েছিলাম। আবুল কালাম ও পুতুল বছর খানেক আগে আমার বাসায় ভাড়া এসেছে। এই সময়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব কলহ দেখতে পাইনি। আজকের এ ঘটনার বিষয়ে আমরা বা পার্শ্ববর্তী ঘরের লোকজন কোনো চিৎকার চেচামেচির শব্দও শুনতে পাইনি। এমনকি তাদের বড় মেয়েও কোনো শব্দ শুনতে পায়নি।
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান কালবেলাকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি থানায় এসে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে জানায়। তাৎক্ষণিক তার দেওয়া তথ্য মতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হওয়া অবস্থায় পুতুল নামের ওই গৃহবধূকে দেখতে পায় পুলিশ। তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পুতুলকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বামী আবুল কালাম বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার ও পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান আছে। ইতিমধ্যে আমাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মন্তব্য করুন