প্রায় দশ বছর আগে স্বামী মারা যায় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার রহিমা বেগমের (৬০)। বছর তিনেক আগে তাকে বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন এলাকার ইউপি সদস্য (মেম্বার)। হতদরিদ্র রহিমা বেগম নিজের পালিত ছাগল ও হাঁস বিক্রি করে সেই টাকা ইউপি সদস্যের হাতে তুলে দেন।
কিন্তু টাকা নেওয়ার পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও তাকে কোনো ভাতার কার্ড করে দেননি সেই ইউপি সদস্য। এমনকি টাকাও ফেরত দেননি তিনি।
উপায়ান্তর না দেখে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রহিমা বেগম টাকা ফেরত পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। একই দিনে আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী একই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ভাতা করে দেওয়ার নামে ৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
ঘটনাটি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের পঞ্চানন গ্রামের। অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্যের নাম কামাল হোসেন। যিনি ওই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য।
ভুক্তভোগীরা হলেন— পঞ্চানন গ্রামের মৃত মোজাফফর আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম, মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম, নুর মোহাম্মদের স্ত্রী রীনা বেগম এবং আব্দুল আজিজের স্ত্রী ফিরোজা বেগম।
ভুক্তভোগী রহিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা গেছেন। দুইটা সন্তানও মারা গেছে। আমি গরিব ও অসহায়। আমার ছাগল ও হাঁস বিক্রি করে অনেক কষ্টে মেম্বারকে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু তিন বছরেও তিনি আমার কোনো ভাতা কার্ড করে দেননি। এমনকি টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। আমি আমার টাকা ফেরত চাই।
আরেক ভুক্তভোগী সুফিয়া বেগম জানান, ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে ওই ইউপি সদস্য তার কাছেও ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু কার্ড করে দেননি, টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। টাকা ফেরত দিবে বলে এক বছর ধরে ঘুরাচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য কামাল হোসেন কালবেলাকে জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। সব ষড়যন্ত্র। তার প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ তার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছেন।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সুমন কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে থানার ওসিকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন