কুমিল্লার দেবিদ্বারে ক্রিকেট খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ওই মসজিদ কমিটির সেক্রেটারিসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে দেবিদ্বার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফতেহাবাদ দক্ষিণ পাড়া বায়তুল আকসা জামে মসজিদে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মুসল্লিরা জানান, মাসখানেক আগে ক্রিকেট খেলা নিয়ে পাশের নয়াকান্দি গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে ফতেহাবাদ দক্ষিণপাড়া গ্রামের ছেলেদের মারামারি হয়। ওই মারামারিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেলে নয়াকান্দি গ্রামের একজনকে মারধর করেন ফতেহাবাদের কয়েকজন তরুণ। পরে রাত ৮টার দিকে নয়াকান্দি গ্রামের তরুণরা ফতেহাবাদ গ্রামের কামরুল নামের একজনকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করেন। এ সময় কামরুলের সঙ্গে থাকা অন্য ছেলেরা প্রাণভয়ে দৌড়ে মসজিদের ভেতরে ঢুকে আশ্রয় নেন। এরপর নয়াকান্দি গ্রামের তরুণরা মসজিদে ঢুকে তাদের ওপর হামলা চালান এবং মসজিদ ভাঙচুর করেন।
এ সময় তাদের বাধা দিতে এগিয়ে এলে মসজিদের সেক্রেটারি মো. ইব্রাহিমসহ অন্তত পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাৎক্ষণিক মসজিদের ইমাম মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় মসজিদের সেক্রেটারি মো. ইব্রাহিমসহ আহতদের উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বাকিদের সেখানে চিকিৎসা চলছে।
মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুল আউয়াল বলেন, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বেশ কয়েকজন যুবক হাতে রড, হকিস্টিক, পাইপসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তারা হঠাৎ মসজিদে ঢুকে মসজিদের গ্লাস, দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। এ সময় মসজিদের সেক্রেটারি ইব্রাহীম বাধা দিলে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে আমি মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে মাইকিং করলে তারা পালিয়ে যায়।
মসজিদের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা মসজিদে নামাজ পড়ছিলাম। হঠাৎ একদল ছেলে মসজিদের বাইরে চারদিকে গ্লাস, দরজা-জানালা ভাঙচুর করতে থাকে। তাদের কয়েকজন মসজিদের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। পরে শুনেছি ক্রিকেট খেলা নিয়ে আগের মারামারিকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুদ্দিন ইলিয়াস বলেন, মারামারি হয়েছে দুই গ্রামের তরুণদের মধ্যে। এক পক্ষ মসজিদে চলে গেলে অপর পক্ষ সেখানে গিয়ে তাদের মারধরের চেষ্টা করে। তখন জানালার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়েছে। মূলত ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মো. ইসমাইল বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন