গত ৭ মাস ধরে বেতন বন্ধ কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত হেলথ কেয়ার প্রভাইডারদের (সিএইচসিপি)। দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। কবে নাগাদ বেতন পেতে পারেন এ বিষয়ে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি।
সরজমিনে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিক গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও জটিল রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ প্রদান করছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীরা।
জানা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সিএইচসিপিদের গত ২০১১ সালে এ প্রকল্প শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ১৪ জুনে মেয়াদ শেষ হয়। এরপর তিন দফা প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলেও বেতন বৃদ্ধি হয়নি এক টাকাও। কিন্তু গত বছরের জুলাই মাস থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন বকেয়া পড়ে। এ অবস্থায় ঢাকায় আন্দোলনে নামেন সিএইচসিপিরা। আন্দোলনের ফলে চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের আশ্বাসও পান তারা। কিন্তু এ আশ্বাসের পরও প্রকল্প বা রাজস্ব খাত কোনোটা থেকেই তাদের বেতন-ভাতা ছাড় করা হয়নি। এতে সাত মাস ধরে তারা কোনো বেতন পাননি, এমনকি প্রণোদনা ভাতাও পাননি।
উপজেলার পূর্ব বাসুলী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. মোজাম্মেল বলেন, গত ৭ মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ। এতদিন ধার-দেনা করে পরিবার ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হয়েছে। এখন ধারও দিচ্ছে না কেউ।
হোসেনপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আব্দুল মান্নান বলেন, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধিতে বর্তমান সময়ে আমাদের সামান্য বেতন দিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালাই। তারপর আবার গত সাত মাস থেকে সেটিও বন্ধ। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছি। দ্রুত এর সমাধান দরকার, আমরা নিরূপায় হয়ে গেছি।
কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) অ্যাসোসিয়েশন জেলা শাখার সভাপতি মোরশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, সারা দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিদের একই অবস্থা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছি না। হচ্ছে, হবে বলেই দিন পার হচ্ছে।
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, সিএইচসিপিদের বেতন বন্ধ থাকায় আমরা ব্যথিত। সারা দেশেরই একই চিত্র। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের উচ্চপর্যায় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিয়মিত অবগত করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন