বগুড়া সোনাতলায় বিএনপি নেতার হামলায় আহত যুবদল নেতা রাশেদুল হাসান রাশেদ মৃত্যুবরণ করেছেন। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
রাশেদুল হাসান রাশেদ (২৭) উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের পাকুল্লা গ্রামের মো. ছাইফুল ইসলাম আকন্দের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পাকুল্লা বাজারে হামলার শিকার হন তিনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে এলাকাবাসী তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান বাটালু, আরেক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জিএম আলী হাসান নারুন এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন বগুড়া শহর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি মাজেদুর রহমান জুয়েল।
অপরদিকে শিক্ষার্থীরাও প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় যুবদল নেতা রাশেদ গুরুতর আহত হন।
এ বিষয়ে পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী হাসান নারুন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় যুবদল নেতা রাশেদ মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় পাকুল্লা বিএনপির সভাপতি এমএ হান্নান বাটালুর নেতৃত্বে তার লোকজন ধাওয়া করে। রাশেদ মোটরসাইকেল ফেলে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানেই পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয় তাকে।
এমএ হান্নান বাটালু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান জুয়েল কয়েকটি মোটরসাইকেলযোগে অনেক বহিরাগত লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে আসে আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে। সে সময় জুয়েলের সঙ্গে যুবদল নেতা রাশেদ ছিল। সন্ধ্যায় কে বা কারা রাশেদকে মারধর করেছে তা আমার জানা নেই। একটি পক্ষ আমার ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।
সাবেক জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান জুয়েল বলেন, পাকুল্লা আমার গ্রামের বাড়ি। শুক্রবার গ্রামের মসজিদে ইমামতি করি। এরপর গ্রামের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে আমাদের মোটরসাইকেল বহরে থাকা যুবদল নেতা মেহেদী হাসান হিরুকে বাটালুর লোকজন মারধর করে। ঘটনাটি সেখানেই মীমাংসা হয়ে যায়। আমি শহরে চলে আসার পর সন্ধ্যায় যুবদল নেতা রাশেদকে বাটালুর নেতৃত্বে মারধর করা হয়।
সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিলাদুন নবী বলেন, পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক দিন ধরে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেই জেরেই রাশেদ নামের একজনকে মারধর করা হয়। মারধরে সে গুরুতর আহত হয় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য করুন