বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানের সঙ্গে নাচের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার দেওয়ালী বথুনদিয়া পাঁচুরিয়া (ডিবিপি) উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ১ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ রিজাউল ইসলামকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার।
নোটিশে বলা হয়েছে, দেওয়ালী বথুনদিয়া পাঁচুরিয়া (ডিবিপি) উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান চলাকালে ছাত্রজনতার বিপ্লবের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ গানে নৃত্য পরিবেশন করা হয়। যা ছাত্র জনতার বিপ্লবকে হতাশ করেছে। এই কার্যকলাপে কেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানাতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান মঞ্চে সাউন্ড বক্সে বাজছে গান- ‘দে তালি, বাঙালি, আজ নতুন করে স্বপ্ন দেখার দিন। জয় বাংলা বাংলার জয়, জয় বাঙালির জয়’। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে এ গানেরসঙ্গে মঞ্চে নৃত্য করছে একটি মেয়ে। গান শুরুর আগে কয়েক সেকেন্ড শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের অংশ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ বাজতে শোনা যায়।
এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার কালবেলাকে বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত হই। তবে জরুরি কাজ থাকায় অনুষ্ঠান শুরুর আগেই আমি সেখান থেকে চলে আসি। আমি আসার পর সাউন্ড বক্সে ওই গান বাজিয়ে নৃত্য পরিবেশন করা হয়। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ কালবেলাকে জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার কারণে সব বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানেই আমাকে অতিথি করা হয়। তবে কাজের ব্যস্ততার কারণে অনেক বিদ্যালয়েই যাওয়া হয় না। দেওয়ালী বথুনদিয়া পাঁচুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানেও আমি যাইনি। তবে পরে সাউন্ড বক্সে গান বাজানোর বিষয়টি আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ রিজাউল ইসলাম বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী তার নিজের মোবাইলে ওই গান বাজিয়ে নৃত্য শুরু করে। তবে গান বাজার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তা বন্ধ করে দিই। একটি মহল বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য গান শুরুর আগে কয়েক সেকেন্ড শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের অংশ এডিটিং করে লাগিয়েছে বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ রিজাউল ইসলাম।
মন্তব্য করুন