বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচনে সভাপতি পদে আওয়ামী লীগ নেতা ও মামলার আসামি প্রার্থী হওয়ার প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে বুধবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলে জেলা কোর্ট বারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় নির্বাচনের প্রার্থিতা থেকে তাকে অপসারণের দাবিতে এক ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় ছাত্র-জনতা। এ ঘটনায় জরুরি সভার পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
আন্দোলনকারী শাহাব উদ্দিন বাবলু বলেন, আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান। তিনি একজন পদধারী আ.লীগের নেতা। বিগত আন্দোলনে তিনি আমাদের বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করেছেন। উনি সভাপতি প্রার্থী। সুতরাং আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ সাধারণ জনতা ওনাকে এ নির্বাচন থেকে অপসারণ করার জন্য এসেছি।’
অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ বলেন, এস এম আজাদুর রহমান একটি মামলার আসামি তবে বৈষম্যবিরোধী কোনো মামলার আসামি নন। আমরা বারের লোকজনকে ডেকেছি। তাদের প্রশ্ন ছিল, যদি তাকে নিয়ে নির্বাচন করেন, আর কোনো কিছু ঘটে। এটার দায়দায়িত্ব আপনারা নেবেন, আমরা নিতে পারব না। আমি তখন বললাম, আমরা দায় দায়িত্ব নিতে পারব না। আমি কেন দায়দায়িত্ব নেব। আমি নির্বাচন কমিশনের অন্য সদস্যদের ডেকেছি। আমরা চাচ্ছি না এটাকে কেন্দ্র করে কোনো হট্টগোল না হোক। আমরা আলোচনায় বসে নির্বাচন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি কাজী মনজুর আহমেদ বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের আজাদুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়েছি। ওনার বিরুদ্ধে মামলা আছে। এ দাবিতে আমরা বারের সামনে অবস্থান করি। রাতে নির্বাচন স্থগিতের কথা জানানো হয়েছে।’
জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আজাদুর রহমানের প্রার্থিতার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আপত্তি জানিয়েছে। তাদের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন, সিনিয়র-জুনিয়র আইনজীবীসহ কমিটির সদস্যরা রাতে বৈঠক করেন। বৈঠকে নির্বাচন সাময়িক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে আলোচনা করে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এতে সভাপতি পদে দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন এএসএম আজাদুর রহমান ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক পদে বিএনপির দোলোয়ার হোসেন ও অ্যাডভোকেট জয়নুল হক। সহ-সাধারণ সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন, জুনিয়র সদস্য পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ ছাড়া সিনিয়র সদস্য ২ জন হলেন মহিউদ্দিন মানিক ও কমিউনিস্ট পার্টির ডাডলি ডেরিক প্রেন্টিস, সহসভাপতি দুইজন হলেন অ্যাডভোকেট গিয়াসউদ্দিন আহমেদ মজনু ও বিএনপির শাহ আখলাকুল আম্বিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন