মহান ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছরেও সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বেশিরভাগ স্কুল-কলেজে নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। স্বীকৃত ২১৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৯ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। এ ছাড়া উপজেলার কোনো মাদ্রাসায় নেই একটিও শহীদ মিনার। যদিও কলারোয়া আলিয়া মাদ্রাসায় একটি শহীদ মিনার নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, যা জেলা পরিষদের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। আজও এর প্রাথমিক কোনো কাজ শুরু হয়নি। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে দুটি ইউনিয়নের কোথাও আজও নির্মাণ করা হয়নি একটি শহীদ মিনার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলারোয়া পৌরসভা ও উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে শহীদ মিনার রয়েছে ৩৪টি। এর মধ্যে কলারোয়া ফুটবল ময়দানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, কলারোয়া সরকারি কলেজ, শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ, বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুল, কলারোয়া সরকারি প্রাইমারি স্কুল, তুলসীডাঙ্গা সরকারি প্রাইমারি স্কুল, গোপিনাথপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুল—এই আটটি শহীদ মিনার কলারোয়া পৌরসভাধীন।
সূত্র জানায়, উপজেলায় ২৭টি এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসার কোথাও নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। উপজেলার ১২টি বেসরকারি কলেজের মধ্যে সাতটি কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা হয়নি কোনো শহীদ মিনার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে পারেন না।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বেসরকারি কলেজের চেয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কেননা উপজেলার এমপিওভুক্ত ৪৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৭টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলার ১২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে সাতটি।
কলারোয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইচএম রোকনুজ্জামান জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের গুরুত্ব অপরিসীম। এরই মধ্যে শহীদ মিনারের সংখ্যা জানতে চেয়ে পত্র দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পত্রে দেওয়া তথ্য আমরা প্রদান করেছি।
সাতক্ষীরা জেলার ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব ভাষাসংগ্রামী প্রয়াত শেখ আমানুল্লাহ তার জীবদ্দশায় অনেক অনুষ্ঠানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে তোলার কথা বলতেন। তিনি প্রয়াত হয়েছেন ৮ বছর। কিন্তু তার লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে প্রয়াত এই ভাষাসংগ্রামীর প্রতি আমরা প্রকৃত শ্রদ্ধা দেখাতে পারি। এজন্য প্রয়োজন উদ্যোগ ও সমন্বিত প্রয়াস।
মন্তব্য করুন