যশোর সদর উপজেলায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পাঁচজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় উপজেলার বড় হৈবতপুরে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
আহতরা হলেন- হৈবতপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহসভাপতি রাজু (৪৪), ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সম্পাদক শামীম (৩৬), বিএনপি কর্মী জিয়া (৩৫) এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের কোষাধক্ষ পাপ্পু।
স্থানীয়রা জানান, চুরামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামের বাসিন্দাদের চাষাবাদের জমি রয়েছে হৈবতপুর ইউনিয়নের বড় হৈবতপুর গ্রামে। যাদের জমি রয়েছে বড় হৈবতপুর গ্রামে তাদের মধ্যে রয়েছেন চুরামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুর রহমান। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আনিছুর নিজের জমিতে সেচের পানি দিতে হৈবতপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জমির আইল কেটে দিতেন।
এ নিয়ে প্রতিবাদ করার কারও সাহস ছিল না। মঙ্গলবার অন্যের পানি নিজের জমিতে দেওয়ার জন্য আইল কেটে দেন আনিছসহ তার লোকজন। ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে আনিছুর নিজ এলাকার মসজিদের দুটি মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন ডাক দেয়। কিছু সময়ের মধ্যে ৫০/৬০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চলে আসে। অন্যদিকে বড় হৈবতপুর গ্রামবাসীও সেখানে চলে আসে।
তারা আরও জানান, এ সময় দুই গ্রামের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন যুবদল নেতা রাজু। দুপক্ষের মধ্যে মীমাংসাও হয়ে যায়। পরে হৈবতপুরের লোকজন বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন। এমন সময় আনিছের নেতৃত্বে শফিক, সন্ত্রাসী তৌহিদ এবং রমজানসহ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হৈবতপুরের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। গুরুতর আহত হন চারজন।
হৈবতপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মাজেদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের শাসন আমলে ইউপি সদস্য আনিছ যা ইচ্ছে তা করেছেন। গড়ে তুলেছেন সন্ত্রাসী বাহিনী। তার নেতৃত্বে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদককারবার, হৈবতপুরের মাঠ থেকে সাধারণ মানুষের ফসল তুলে নিয়ে যাওয়া, অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবিসহ নানা ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল হৈবতপুরবাসী।
তিনি আরও বলেন, থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে গেছে। সরকার পতনের পর থেকে আনিছ চক্র আত্মগোপন করে। কিন্তু সম্প্রতি ফের প্রকাশ্যে এসে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আনিছ বাহিনী।
যশোর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মিঠুন কুমার বলেন, আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় বেশ কয়েকটি ক্ষত রয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা বলেন, আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠার চেষ্টা করছে। আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় গ্রামবাসীর পাশে দাঁড়িয়ে আহত হয়েছেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। জড়িতদের দ্রুত আটকের দাবি জানাই।
কোতোয়ালি থানার ওসি কাজী বাবুল কালবেলাকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন