চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি এলাকায় একটি কলোনিতে লাগা আগুনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে এক দম্পতি মারা গেছেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তাদের দুই সন্তানসহ তিনজনকে আহতবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে কোতোয়ালি থানার বলুয়ারদীঘির পশ্চিম পাড়ে জাফর সওদাগর কলোনির একটি বসতঘরে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চন্দনপুরা ও নন্দনকানন স্টেশনের দুটি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত দম্পতি হলেন মো. ইলিয়াছ (৫০) ও তার স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪৫)। হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাদের দুই সন্তান মো. সোহান (১৯) ও শাহীনা আক্তার (২৩) এবং নিকটাত্মীয় মো. ফয়সাল (১৯)। বাসায় না থাকায় ইলিয়াস-পারভিনের আরেক মেয়ে তাহসিন (১৪) অক্ষত আছে বলে জানা গেছে। তাদের সবাইকে হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাজি জাফর সওদাগর কলোনির মকসুদ মিয়া নামের একজনের মালিকানাধীন টিনশেড সারিবদ্ধ ঘরে আগুন লাগে। সেখানে পাঁচটি ঘর পুড়ে গেলেও বসতঘরের বাসিন্দাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু যে পাঁচজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় পাশের সেমিপাকা একটি ভাড়া ঘরের বাসিন্দা। সেই বসতঘরে আগুন লাগেনি। তবে টিনশেড ঘরে লাগা আগুনের ধোঁয়া তাদের বসতঘর আছন্ন করে ফেলে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিভিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় জানতে পারে একটি সেমিপাকা ঘরের শৌচাগারে পাঁচজন আটকে আছেন। পরে তারা আহতাবস্থায় ওই পাঁচজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কতর্ব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান মো. রফিক উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘আহত তিনজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত ব্যক্তিদের শরীরে পোড়ার ক্ষত ছিল না।’
ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, ধারণা করা হচ্ছে আগুনের ধোঁয়া থেকে বাঁচতে পাঁচজন একটি শৌচাগারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আমরা তাদের অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করি। তারা ঘর ছেড়ে বের হয়ে গেলে হয়তো নিজেদের বাঁচাতে পারতেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক কালবেলাকে বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে কলোনিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে চন্দনপুরা ও নন্দনকানন স্টেশনের দুটি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে পাঁচটি কাঁচা-পাকা ঘর পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পরে দুজনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। আগুনে ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি ও ৩৫ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন