রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সাত দিনের মধ্যে দাবি না মানা হলে ক্যাম্পাসে শাটডাউন কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন রংপুর মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব রহমত আলী ও বেরোবির সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন।
তারা বলেন, তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় শহরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু তৎকালীন ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন নামফলক ও নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করতে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামটি নামমাত্র ব্যবহার করে, যার কোনো যৌক্তিকতা ছিল না। বরং বেগম রোকেয়ার নামে বিশেষায়িত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেত। কেন না রংপুর শহরে বেগম রোকেয়া সরকারি মহিলা কলেজ রয়েছে, যেটি বেগম রোকেয়াকে ধারণ করে অর্ধশতকেরও বেশি সময় ধরে নারীদের উচ্চ শিক্ষায় অবদান রেখে চলছে। এটি ১৯৬৩ সালে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত ও তার প্রতিকৃতিও রয়েছে সেখানে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচারের শাসনামলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহালের দাবি উঠলে তখন নানা ট্যাগ দিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দমিয়ে রাখা হয়। ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন আওয়াম লীগ সরকার তথা শেখ হাসিনা যখন রংপুরে একটি ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয় তখন শিক্ষার্থীদের কঠোর আন্দোলনের মুখে সে সিদ্ধান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও সরকার সরে আসতে বাধ্য হয় ।
তাদের দাবি, রংপুরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি সেই অঞ্চলের নামে প্রতিষ্ঠা পেলেও আওয়ামী লীগ সেটি অত্যন্ত সুচতুরতার সাথে পরিবর্তন করে। প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও আবাসন, পরিবহন সংকট তীব্র। আওয়ামী লীগ যেন শুধু নাম পরিবর্তন করেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফায়দা নেয়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার দেওয়া এই নাম থাকতে পারে না বলে জানান তারা।
একই দাবিতে কয়েক মাস থেকে শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, উপাচার্য ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী বলেন, বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টাকে অবগত করা হলে তিনি ইতিবাচক নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরাও চাই নাম পরিবর্তন হোক।
মন্তব্য করুন