লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মরদেহ সৎকার করতে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে শ্মশানঘাট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান।
জানা যায়, উপজেলার বড়খেরি ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর গ্রামে ১২ শতাংশ জমিতে ইট, বালু, সিমেন্ট ও রডের আধলে প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শ্মশানঘাট নির্মাণের কাজ চলছে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জানান, কিছুদিন আগে অশ্রনা রাণী দাস নামে একজন নারী মারা যান। তার মরদেহ সৎকার করতে জায়গা থাকলেও করা সম্ভব ছিল না। খোলা মাঠে সৎকার করলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি সাবেক এমপি আশরাফ উদ্দিন নিজানকে জানালে তিনি বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে শ্মশানঘাট করে দেবে বলে আশ্বাস দেন। সেই প্রতিশ্রুতিতে তার নিজস্ব অর্থায়নে ১২ শতাংশ জমিতে শ্মশানঘাট নির্মাণ করে দিচ্ছেন। শ্মশানঘাট নির্মাণে হিন্দুদের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে। এতে এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন খুশি ও আনন্দিত। মেঘনার ভাঙনে জর্জরিত এখানকার হিন্দুরা। দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণে তারা সাবেক এমপির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
প্রশান্ত চন্দ্র দাস জানান, তার মায়ের মৃত্যুতে শেষ দাহ করতে সমস্যা সৃষ্টি হয়। পরে ঘরের সামনে মার শেষ সৎকার করি। মেঘনার ভাঙনে শ্মশানঘাট ভেঙে যায়। খোলা মাঠে সৎকার সম্ভব না। মানুষ পোড়া গন্ধ বের হয়। একটি শ্মশানঘাট নির্মাণ করতে প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা ব্যয় হয়। এত টাকা ব্যয় করা হিন্দুদের সম্ভব হচ্ছে না। পরে সাবেক এমপি এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজানকে জানালে তিনি নিজ অর্থায়নে শ্মশানঘাট নির্মাণ করে দিচ্ছেন। আমরা তার মঙ্গল কামনা করছি। তিনি মানবিক ও মানবতার পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি মুসলমান সম্প্রদায়ের হয়েও হিন্দুদের শ্মশানঘাট নির্মাণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
ইউপি সদস্য বাবু মানিক চন্দ্র দাস বলেন, এই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘ ৫ বছরের আশা একটি শ্মশানঘাট নির্মাণ, সেটি ছিল খুবই ব্যয়বহুল। আমাদের সাবেক এমপি এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান নিজের অর্থায়নে প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শ্মশানঘাট নির্মাণ করে দিচ্ছেন। উনি সত্যিকারে মহান ব্যক্তি। হিন্দুদের জন্য উনার দৃষ্টান্ত তুলনাহীন। এতে এই অঞ্চলের হিন্দুরা খুশি ও আনন্দিত। আমরা হিন্দু ধর্মের লোকজন সব সময় উনার পাশে আছি, থাকব।
রামগতি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, রামগতির রঘুনাথপুর এলাকায় নদী ভাঙনকবলিত হিন্দু সম্প্রদায়ের মরদেহ সৎকার করতে কোনো শ্মশানঘাট ছিল না। তাদের দীর্ঘদিনের আশা ও স্বপ্ন শ্মশানঘাট নির্মাণ করতে আমাদের সাবেক এমপি এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান ১২ শতাংশ জমিতে ব্যয় বহুল অর্থে শ্মশানঘাট নির্মাণ করে দিচ্ছেন। এমপি নিজান সত্যিকারে একজন মানবিক ও মানবতার ফেরিওয়ার পরিচয় দিয়েছে।
এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, প্রতিটি প্রাণী আল্লাহ সৃষ্টি। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। মুসলমানদের মৃতদেহ মাটি দেওয়া হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের মরদেহ সৎকার, পোড়ানো হয়। রামগতির রঘুনাথপুরের নদী ভাঙা হিন্দু সম্প্রদায়ের মরদেহ সৎকারের উপযুক্ত ব্যবস্থা ছিল না। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও আশা ছিল শ্মশানঘাট। শ্মশানঘাট নির্মাণ করে দিতে পেরে ভালো লাগছে।
মন্তব্য করুন