বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, গত ১৫ বছর ধরে ছাত্রশিবিরকে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি মাদরাসাগুলোতেও স্বনামে দাওয়াত দেওয়ার পথরুদ্ধ করা হয়েছিল। ছাত্রসমাজ থেকে দূরে রাখতে শিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে তাদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাসা থেকে আমাদের কর্মীদের ধরে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ছাত্রশিবির এখন ছাত্রসমাজের সবচেয়ে আপন সংগঠন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নোয়াখালী শহর শাখা আয়োজিত ‘ইবনে আউফ কমার্স কার্নিভাল-২৫’ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, চব্বিশের আন্দোলনে দুই হাজার শহীদ ও হাজার হাজার ছাত্র-জনতা আহত হওয়ার বিনিময়ে সফলতা এসেছে। এ সফলতার প্রথম শহীদ আবু সাঈদ। তবে আমরা সবাই এ আন্দোলনের সামনে ছিলাম। শিবির মেধাবীদের সংগঠন, যা ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে চায়।
শিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি আরও বলেন, ‘মেধা ও সততায় গড়ব সবার বাংলাদেশ’ আমাদের এবারের প্রতিপাদ্য। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে ধর্মীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না। সবাই সমান সুযোগ পাবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধা ও যোগ্যতার বিকাশ ঘটিয়ে দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে তুলতে চাই।
বাংলাদেশে সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। কিন্তু দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অপরাজনীতির কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। পশ্চিমারা আমাদের শিক্ষা দিতে চায়, অথচ একসময় মুসলমানরা শিক্ষা, সাহিত্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ ছিল। আমরা সেই হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চাই।
শিবিরের ত্যাগের ইতিহাস স্মরণ করে ছাত্রশিবিরের শীর্ষ এ নেতা বলেন, জুলাই বিপ্লবের আগে শিবিরের ২৩৪ জনকে শহীদ করা হয়েছে এবং এখনো সাতজন নিখোঁজ রয়েছে। ২০২৪ সালের বিপ্লবে হাজারো মানুষ জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে, আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে এ বিপ্লবকে সফল করেছে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, আগের নেতারা ভোট ডাকাতি, রাতের ভোট ও গণহত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করত। কিন্তু আমরা চাই, এ দেশের ছাত্রসমাজ মেধা ও যোগ্যতার বিকাশ ঘটাক এবং নতুন নেতৃত্ব তৈরি করুক।
ছাত্রশিবিরের নোয়াখালী শহর শাখা আয়োজিত ‘ইবনে আউফ কমার্স কার্নিভাল-২৫’ এ ৪০টি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। যেখানে মোট ১১০ জন প্রতিযোগী ছিল। অনুষ্ঠানে বিজনেস আইডিয়া কনটেস্ট, বিজ কুইজ ও রুবিক্স কিউব এ তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে তিনজন করে মোট তিনজন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী শহর শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ব্যবসা শিক্ষা সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।
মন্তব্য করুন