কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসকে পাবলিক টয়লেট করার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভবনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের মহানগর শাখার আহ্বায়ক মো. আবু রায়হান। এ ছাড়া ওই ভবনের সামনের খালি স্থানটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রাত থেকেই কার্যক্রম শুরু করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের পাশের ভবনে জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে স্থাপন করা নৌকার প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলা হয়। পরে সেখানে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতারা।
কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক মো. আবু রায়হান বক্তব্যে বলেন, ‘অফিসের সামনের খালি স্থানটি সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড এবং মহানগর আওয়ামী অফিসটি পাবলিক টয়লেট হিসেবে আমরা তৈরি করে দেব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের আহ্বায়ক আবু রায়হান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কোনো নাম নিশানা আর কুমিল্লার মানুষ আর দেখতে চায় না। তাই এ সংগঠনের অফিস আর কুমিল্লায় থাকবে না। জনগণের জন্য এ অফিস ‘পাবলিক টয়লেট’ হিসেবে আমরা আগামী সপ্তাহে তৈরি করে দেব।’
এ সময় সংগঠনের সদস্য সচিব রাশেদুল হাসানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর অফিসের সামনে খালি স্থানে অটোরিকশা স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে নতুন মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস হিসেবে এ ভবনের উদ্বোধন করেন আ.লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নগরীর রামঘাট এলাকায় নান্দনিক কারুকাজ ও আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ৯ তলা এ ভবনের উদ্যোগ, পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কুমিল্লা সদর আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
বর্তমানে বাহার ও তার মেয়ে সিটি করপোরেশনের অপসারিত মেয়র ডা. তাহসিন বাহার সূচনা ভারতে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া অধিকাংশ নেতাকর্মীও আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে দলের দায়িত্বশীল কারও বক্তব্য জানা যায়নি। এর আগে বুধবার রাত থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নগরীতে আওয়ামী লীগের দলীয় অফিস ও বাহারের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ব্যানারে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা বিকেলে কুমিল্লার আদালত প্রাঙ্গণ এবং নগর উদ্যানে গেটে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। পরে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঞার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
এ সময় আদালত চত্বরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী ইন্ধনদাতা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে ২০ জন আইনজীবীকে আদালত অঙ্গন থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে তাদের নাম ও ছবি সংবলিত ব্যানার আইনজীবী সমিতির সামনে টানিয়ে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন