রংপুরের তারাগঞ্জে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ৩টায় উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পূর্বনির্ধারিত নারীদের ফুটবল ম্যাচ নিয়ে দুপক্ষের উত্তেজনায় খেলা বন্ধের ঘোষণা দেয় প্রশাসন।
জানা গেছে, আজ (বৃহস্পতিবার) ওই মাঠে আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে জয়পুরহাট নারী দল ও রাজশাহী নারী দলের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। মাঠ ও খেলোয়াড়দের প্রস্তুতিও ছিল সম্পন্ন। কিন্তু নারীদের ফুটবল খেলা বন্ধের ডাক দিয়ে মাইকিং করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আশরাফ আলী। ফলে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মী ও তৌহিদী জনতার সাথে খেলার আয়োজকদের মধ্যে দেখা দেয় উত্তেজনা।
পরে স্থানীয় সুধীমহলসহ দুপক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন ইউএনও রুবেল রানা। কিন্তু দুপক্ষের মতানৈক্যের ফলে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করে খেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরের ন্যায় বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। কারও কোনো আপত্তি নেই। খেলার আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। আজ বিকেল ৩টায় জয়পুরহাট নারী ফুটবল দল ও রাজশাহী নারী ফুটবল দলের খেলা ছিল। খেলোয়ারেরা চলে এসেছে। কিন্তু হঠাৎ ইসলামী আন্দোলনের নেতা আশরাফ আলী খেলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করলে বিকেলে আলোচনায় বসা হয়। সেখানে তিনি বিক্ষোভের হুমকি দিলে প্রশাসন খেলা বন্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে।
আয়োজক কমিটির একজন বলেন, এলাকার ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দ দিতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু ইসলামী আন্দোলনের নেতা আশরাফ আলী না বুঝে বিক্ষোভের হুমকি দেওয়ায় খেলা বন্ধ করা হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, আমাদের দাবি ছিল খেলা বন্ধ করা। খেলা বন্ধ করেছে প্রশাসন। আমরা আমাদের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি।
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুবেল রানা বলেন, ইসলামী আন্দোলন তারাগঞ্জের নেতা, ইত্তেহাদুল উলামা সংগঠনের নেতাদের সাথে খেলার আয়োজক কমিটিকে নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে জামায়াত ইসলামের নেতৃবৃন্দ, বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও ছিলেন। খেলা চলা ও বন্ধ নিয়ে উভয়পক্ষের সমঝোতা না হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেখানে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এখন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছে। খেলা বন্ধ হওয়ায় খেলোয়াড়রা চলে গেছে।
মন্তব্য করুন