ভোলায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, ভোলা-১ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। আজ দ্বিতীয় দিনেও জ্বলছে সেই আগুন। উৎসুক জনতা ভিড় করে প্রকাশ করছে তাদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আর করছে নানা ধরনের মন্তব্য। চলছে লুটপাট।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়িতে উৎসুক জনতা ঢুকে হাতের কাছে যে যা পেয়েছে তা নিয়ে গেছে।
এসময় বাড়ির ভেতরে বিভিন্ন দপ্তরের নিয়োগসক্রান্ত কাগজপত্রসহ মূল্যবান আসবাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়াও বাসাটিতে থাকা সিলিং ফ্যান ও এসি খুলে নিতেও দেখা গেছে। দ্বিতীয় দিনের মতো বাসাটিতে আগুন জ্বললেও এখন পর্যন্ত আগুন নেভানোর উদ্যোগ নেই।
গত ৫ আগস্ট দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলে সারা দেশের ন্যায় ভোলার রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ আন্দোলনে ভোলার নেতৃত্বে থাকা আ.লীগের নেতাকর্মী ও ভোলার ৪টি আসনের সাবেক এমপিরা পরিবার-পরিজনসহ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় একরকম পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে তাদের বাড়িঘর। ফলে দীর্ঘ ছয় মাসে সবার দৃষ্টির আড়ালেই চলে যায় এসব স্থাপনা।
গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভার্চুয়াল বক্তব্যে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভোলার রাজপথ। এর প্রতিবাদে রাত ৯টার দিকে ভোলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী ও ছাত্র-জনতা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে।
পরে বুধবার মধ্যরাতে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ভোলার বাংলা স্কুল মোড় থেকে ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা এ ভোলাতে রাখবো না’, ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিয়ে শহরের গাজিপুর রোডে অবস্থিত ‘প্রিয় কুটির’ নামে তোফায়েল আহমদের বাসভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় ঘরে থাকা আসবাবপত্র বাইরে নিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।
মূলত, ভোলাতে প্রিয় কুটির নামের এই বাড়িতে বসবাস করতেন তোফায়েল আহমেদ। বাড়িটিতে বসেই দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন তিনি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে এখানে আর কেউ আসেননি। তখন থেকে বাড়িটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল।
এ বিষয়ে ভোলা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক রেজওয়ান আহমেদ কালবেলাকে জানান, আগুন লাগার বিষয়ে কেউ আমাকে ফোন দেয়নি। তাছাড়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ, নৌবাহিনী ও প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব নয়।
ঘটনা সম্পর্কে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার কালবেলাকে জানান, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন