খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেছেন বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ড্যাব নেতা ডা. আবু জাফর মো. সালেহ। ডা. পলাশ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। আওয়ামী লীগ আমলের ১৫ বছরে ১৩ বার বদলি করা হয়েছিল তাকে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালকের কাছে যোগদান করেন।
ড্যাব খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. পলাশ শুধু বিএনপি সমর্থক হওয়ার কারণে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে এতবার বদলি করা হয়েছিলেন বলে মনে করেন অধিকাংশ চিকিৎসক। খুলনা মেডিকেলে যোগদান করায় তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়, চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজের কে-৫ ব্যাচ এর শিক্ষার্থী ডা. আবু জাফর মো. সালেহ ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি চাকরিতে যোগদান করে নিয়ম অনুযায়ী ২ বছর উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স এ চাকরির পর মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পেশাজীবী দলীয় প্রতিহিংসার শিকার হয়ে শাস্তিমূলক বদলি হতে হয় চট্রগ্রামে। এরপর কুমিল্লার মেঘনা, দাউদকান্দি, শিক্ষাকোর্স ঢাকা মেডিকেলম, বরিশাল, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, খুলনার দাকোপ, যশোরের চৌগাছা, বাগেরহাটের কচুয়া ও রামপাল এবং বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ গত ১৫ বছরে ১৩ বার বদলি করা হলেও নিজের শহর ও মেডিকেলে তাকে আসতে দেয়া হয়নি।
জানা যায়, বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ কর্মী থেকে প্রতিটি আন্দোলনে চিকিৎসক হিসেবে ভূমিকা রাখেন ডা. আবু জাফর মো. সালেহ পলাশ। দায়িত্ব পান খুলনা মেডিকেল ড্যাবের সাধারণ সম্পাদকের। দায়িত্ব পেলেও বদলি হতে পারেননি গত ১৫ বছরে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও নানা জটিলতায় বদলি হতে পারেননি তিনি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বাগেরহাট সদর হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট হিসেবে বদলি হন তিনি। এতে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ। তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ড্যাব ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা।
ডা. আবু জাফর মো. সালেহ কালবেলাকে বলেন, আমি জাতীয়তাবাদী আদর্শের মানুষ। শুধু এই অপরাধের কারণে গত ১৫ বছরে নিজের মেডিকেলে কাজ করতে আসতে পারিনি। ১৫ বছরে ১৩ বার বদলি করা হয়েছে আমাকে। চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে সাতক্ষীরা শ্যামনগর কোথাও দুই বছর স্থায়ী হতে পারিনি। সার্বক্ষণিক মানসিক যন্ত্রণায় থেকেছি। তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষ সঠিকভাবে চাকরি করার সুযোগ পাচ্ছে। আগামী দিনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ম অনুযায়ী চাকরির পাশাপাশি চিকিৎসকদের সমস্যা ও যৌক্তিক দাবির চিকিৎসকদের পাশেই থাকবো।
মন্তব্য করুন