যশোরের মনিরামপুরে শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেট বানানোর অভিযোগ উঠেছে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে। আব্দুর রশিদ কুশোরীকোনা-কামিনীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
সম্প্রতি উপজেলার কুশোরীকোনা-কামিনীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে টয়লেট নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই মাঠে মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রায় ৩০ বছর আগে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। ওই শহীদ মিনারেই প্রতিবছর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছে উভয় স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। কিন্তু কিছু দিন আগে হঠাৎ শহীদ মিনারটি ভেঙে সেখানে টয়লেট নির্মাণের কাজ শুরু করেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ। এ সময় স্কুলের শিক্ষকরা ছাড়াও স্থানীয়রা শহীদ মিনারটি না ভাঙতে অনুরোধ করেন। তবে কারো কথা কানে তোলেননি তিনি।
এদিকে ফলে শহীদ মিনার না থাকায় এ বছর আসন্ন শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি একজন শিক্ষকের এমন কাণ্ডে হতবাক স্থানীয়রাও।
একই মাঠে স্থাপিত কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান জানান, নিষেধ করার পরও প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ কর্ণপাত না করে এমন জঘন্য কাণ্ড ঘটিয়েছেন। নিরুপায় হয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, আব্দুর রশিদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চাকরি জাতীয়করণের পর তিনি আর কোনো পদে আসেননি। তবে তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
এদিকে শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেট করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ। বিদ্যালয়ে আরও জায়গা থাকার পরও শহীদ মিনার ভেঙে কেন টয়লেট নির্মাণ করতে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠের অন্যপ্রান্তে পানি জমে থাকে তাই শহীদ মিনারের জায়গায় টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে।
আব্দুর রশিদ বলেন, মাঠে পানি থাকায় জায়গা সংকটে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে শহীদ মিনার ভেঙে ওয়াশব্লক করা হচ্ছে। অচিরেই নতুন করে একটি শহীদ মিনার করা হবে।
এ সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত থাকার বিষয়টিও স্বীকার করেন আব্দুর রশিদ।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জ্ঞাতসারে এমনটি হয়েছে কিনা জানতে মনিরামপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব কুমার দত্তের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও কলটি রিসিভ হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন