যশোরের ঝিকরগাছায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে ফজিলা চম্পা নামে এক গৃহবধূর মাথার চুল কেটে ও মুখে কালি মাখিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওইদিন রাতে ভুক্তভোগী নারী মামলা করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন- ঝিকরগাছার বনেয়ালি কলাবাগানপাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে শিমুল হোসেন, পদ্মপুকুর গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের স্ত্রী শারমিন আক্তার রুমি, বেনেয়ালি গ্রামের মফিজুর ড্রাইভারের স্ত্রী রনি বেগম ও পদ্মপুকুর গ্রামের মুকুল বিশ্বাসের স্ত্রী রহিমা।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী ফজিলা খাতুন ঝিকরগাছা উপজেলার চাপাতলা গ্রামের তোরাব মোড়লের মেয়ে।
ভুক্তভোগী ফজিলা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, দুই বছর আগে আমার ছেলে রায়হানের সঙ্গে বিথীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি তাদের মধ্যে পারিবারিকভাবে বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর বিথী একই উপজেলার গদখালি ইউনিয়নের বেনেয়ালি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে শিমুলের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসে। রোববার বিকেলে বেনেয়ালি গ্রামে আমার ছেলের আগের বউকে দেখতে যাই। এ সময় তার নতুন স্বামী শিমুল হোসেন, চাচি শারমিন আক্তার রুমি, চাচিশাশুড়ি রনি বেগম, মা রহিমা বেগমসহ লোকজন মাথার চুল কেটে মুখে কালি দিয়ে দেয়। এ সময় তারা বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এমন বর্বরতার সময় অনেকে উল্লাস করতে থাকেন। উপস্থিত আরও অনেক নারী-পুরুষ পুরো ঘটনা ভিডিও করেন। শুধু মারধর করেই তারা থেমে থাকেননি। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শিমুলের বাড়ির পিলারের সঙ্গে বেঁধে রেখে সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পুলিশের কাছে দেওয়ার চেষ্টা করে। কোথাও অভিযোগ করলে আরও বড় ধরনের ক্ষতি করার ভয় দেখায় অভিযুক্তরা। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে থানায় মামলা করেছি।
স্থানীয় গদখালি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ইউপি সদস্য আবুল কাশেম বলেন, ওই নারীকে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। এভাবে একজন মানুষকে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে।
ঝিকরগাছা থানার ওসি মো. বাবলুর রহমান খান বলেন, ভুক্তভোগী ফজিলা খাতুন তার ছেলের আগের বউ বিথিকে দেখতে তার নতুন স্বামীর বাড়ি গিয়েছিল। বিথির স্বামী ও তার বাড়ির লোকজন আটকে রেখে ফজিলা খাতুনের মাথার চুল কেটে দেয়। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন