নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে এ এন এন ইয়াছিন নামে এক শিক্ষককে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা ডা. রেজাউল হকের বিরুদ্ধে। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের পণ্ডিতেরহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ইয়াছিন উপজেলার পশ্চিম চরকাঁকড়া পণ্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। অভিযুক্ত ডা. রেজাউল হক (৫৫) উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
পশ্চিম চরকাঁকড়া পণ্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন সরকার বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে পশ্চিম চরকাঁকড়া পণ্ডিতেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা চলছিল। সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল হকের শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় তিনি বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি বানাতে তার ছেলে তানভীর হোসেন শুভর (২৮) নাম প্রস্তাব করে। কিন্তু বিএনপি নেতার ছেলের বয়স কম হওয়ায় বয়োজ্যেষ্ঠ এ বি এম ছিদ্দিক (৭৫) ও এ কে এম আব্দুল ওহাব (৬৩) ও গোলাম সরওয়ারের (৪৭) নামের তালিকা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।
জাকির আরও বলেন, এডহক কমিটির সভাপতির তালিকায় ছেলের নাম না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হন রেজাউল। রোববার বেলা ১১টার দিকে জরুরি কাজে বিদ্যালয়ে থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে বিএনপি নেতা প্রধান শিক্ষকের গতিরোধ করে পথ আটকায়। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে গালাগাল করে কিল-ঘুষি দেন। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতার ফার্মেসি ভাঙচুর করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা রেজাউল হক অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, প্রধান শিক্ষককে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে একটু গালমন্দ করেছি।
এ সময় তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমি ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে গত ১৪ বছর ধরে নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমার ছেলে মাস্টার্স পাস। তার সঙ্গে আরও তিনজন এডহক কমিটিতে প্রার্থী। তারা সবাই ডিগ্রি পাস। প্রধান শিক্ষক অন্য আরেকজনের সঙ্গে চক্রান্ত করে আমার ছেলের নামটি তালিকায় রাখেনি।
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোনটি রিসিভ হয়নি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফৌজলুল আজিম বলেন, শিক্ষককে হেনস্তা করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন