সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ফুলজোড় নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হওয়া তিন স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদলের সদস্যরা ফুলজোড় নদীর ঝাঁটিবেলাই এলাকায় প্রায় ৪ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে কৃষ্ণ নিয়োগী (১৫) ও সারজিলের (১৫) মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাফির (১৫) মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
নিহত কৃষ্ণ সিরাজগঞ্জ শহরের বাহিরগোলা ঘোষপাড়া মহল্লার মৃত বিশ্বজিৎ নিয়োগীর ছেলে ও সারজিল মাসুমপুর মহল্লার অধ্যাপক ইমরুল হাসান সোহেলের ছেলে। রাফি ঝাঁটিবেলাই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। তিনজনই সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র।
কামারখন্দ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর অপু কুমার মন্ডল কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সৈকত ও আব্দুল মমিন জানান, ঝাঁটিবেলাই গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক রঞ্জুর নাতি জারিফের পাঁচ বন্ধু তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। বেড়াতে এসে তারা ছয়জন দুপুরে ফুলজোড় নদীতে গোসল করতে নামে। গোসলের একপর্যায়ে তিনজন নদীতে ডুবে যায়। অপর তিনজন সাঁতরে উঠে আসে।
নদী সাঁতরে বেঁচে ফেরা শিফাত বলেন, আমরা যখন সবাই গোসল করছিলাম তখন আমাদের মধ্যে তিন চারজন সাঁতরে ভেতরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। সেখানে নদী অনেক গভীর ছিল, নিচের দিকে স্রোতও ছিল। আমি সবাইকে ভেতরের দিকে যেতে নিষেধ করছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। একপর্যায়ে পাঁচজনই তলিয়ে যাচ্ছিল, আমি খুব কষ্ট করে দুজনকে টেনে পারে তুলে নিয়ে এসেছি।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা অপু কুমার মন্ডল বলেন, শনিবার বিকেল ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহর থেকে বেড়াতে এসে ঝাটিবেলাই এলাকায় ফুলজোড় নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয় তিন স্কুলশিক্ষার্থী। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাফির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর রাতে রাজশাহী থেকে ডুবুরিদল এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আলো স্বল্পতার কারণে রাতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু করে ডুবুরিদল। দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যেই সারজিল ও কৃষ্ণ নিয়োগীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কামারখন্দ থানার ওসি মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, নিহত স্কুলছাত্রদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য করুন