চট্টগ্রামের রাউজানে বড় অঙ্কের চাঁদা নিয়ে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের’ বিএনপিতে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জসীম উদ্দিন চৌধুরী।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজ দলের একাংশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন তিনি।
গত ১৭ বছর ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ হাতে পুরো রাউজানবাসী জিম্মি ছিল দাবি করে জসীম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে সাধারণ জনগণ স্বস্তি পেয়েছিল। কিন্তু রাউজানের একটি পক্ষ (বিএনপি) যারা দীর্ঘসময় এলাকায় ছিল না, তারাই আজ পতিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের সঙ্গে নিয়ে পুরোনো কায়দায় এলাকার বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটতরাজ, চাঁদাবাজি, রাহাজানি ও খুনের সঙ্গে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। বড় অঙ্কের চাঁদা নিয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিএনপিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের একটি অংশের বিরুদ্ধে ৫ আগস্ট রাউজান থানায় হামলা করে অস্ত্র লুটপাট, রাউজানের ৪৮টি ইটভাটা থেকে দুই লাখ টাকা করে চাঁদা আদায়, কাঠবোঝাই ট্রাক থেকে ৩০০ টাকা করে চাঁদা আদায়সহ আরও বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন জসীম উদ্দিন। এ ছাড়া রাউজানের পশ্চিম গুজরায় ১৫ শতাংশ চাঁদা পরিশোধ না করায় ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া, চাঁদা না পেয়ে প্রবাসী সিআইপি ইয়াছিন ও ফোরকানের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, ব্যবসায়ী-প্রবাসীদের জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগও করেন তিনি।
জসীম উদ্দিন বলেন, ‘রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়ন বিএনপির তথাকথিত সাধারণ সম্পাদক দাবিদার মোজাহের আলম নগরীর খুলশীতে এক বাসায় গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি চাঁদা না দেওয়ায় রাউজানের নোয়াপাড়ায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিএনপি নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অন্যপক্ষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে যারাই এ ঘটনায় জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা ১৭ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি। ৫ আগস্টের পর এলাকায় গিয়ে দেখলাম, যারা ১৭ বছর ধরে আমাদের জ্বালিয়েছে, তারা রূপ পরিবর্তন করে, মানুষ একই, কিন্তু রূপ পরিবর্তন করে তারা আজও আমাদের জ্বালাচ্ছে। যারা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদধারী নেতা ছিল, এমপির সঙ্গে যাদের ছবি আছে, ব্যানার-পোস্টার ছিল, তারাই দেখি এখন রূপ পরিবর্তন করে তারেক রহমানের সৈনিকদের অত্যাচার-নির্যাতন করছে। আমরা এই ক্ষোভ জানাতে এসেছি, কোনো নেতার সঙ্গে রেষারেষি করতে আসিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে রাউজান পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবু আহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার উদ্দিন খান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন