গণবিপ্লবে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পরবর্তী সময়ে হাজারো ঘটনার মধ্যে একটি বাউফলের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবানন্দ বণিক অপহরণ হলে উদ্ধার করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ দুঃসহ সময়ে নিরীহ সংখ্যালঘুদের প্রতি দেশের প্রশাসনগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ এ অন্ধকারছন্ন সময়ে আশার আলো দেখাচ্ছে।
শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বরিশালের আর্যলক্ষী মিলনায়তনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় অংশ নিয়ে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা এসব কথা তুলে ধরেন। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ সভায় অংশ নেন বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার, মহানগর এবং ৫৪টি উপজেলা ও পৌরসভার প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় গত বছরের ৫ আগস্টের পর সাম্প্রদায়িক নির্যাতন-নিপীড়ন, হামলা ও দখলদবাজির মর্মস্পর্শী বিবরণ তুলে ধরা হয়। অনেক প্রতিনিধিই কান্নাজড়িত কণ্ঠে হামলার ভয়ংকর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। এই দুঃসময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রশংসা করে বলা হয়, তারা অত্যন্ত দ্রুত পাশে এসে দাঁড়ানোয় বহু পরিবার ও প্রতিষ্ঠান বেঁচে গেছে। এ মাটিতে বাঁচার স্বপ্ন ফিরে এসেছে।
প্রতিনিধিরা আরও বলেন, এই দুর্দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলও হিন্দুদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় প্রশাসনও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তবে দুঃখজনক হচ্ছে, এখনো কোনো কোনো জায়গায় হামলা হচ্ছে, প্রতিমা ভাঙচুর হচ্ছে। এখন সবচাইতে ভয়ংকর থাবা বিস্তার করছে নীরব চাঁদাবাজি, হুমকি। সংখ্যালঘুদের মধ্যে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাড সুব্রত চৌধুরী বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন না আজকে তারা আমাদের সবক দেয়। অনেকে বলে সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিবে। এ আমরা মেনে নিতে পারি না। আজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসন থেকে পদবঞ্চিত। একই সময়ে লক্ষ করলে দেখবেন, জামায়াতের লোকজন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসন দখল করছে।
প্রতিনিধি সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, আমরা কখনো হিন্দু কোনো নাম রাজাকার হতে দেখিনি, অর্থাৎ হিন্দুরা কখনো দেশের বিরুদ্ধে কাজ করেনি। হিন্দু সম্প্রদায় দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পক্ষে সর্বদা কাজ করে চলেছেন।
পুরো সময় ধরে সভায় উপস্থিত থেকে তৃণমূল পর্যায়ের হিন্দুদের ভোগান্তি ও হয়রানির কথা শোনেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সভাপতি বাসুদেব ধর, সহসভাপতি তাপস পাল, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শ্যামল রায়, গোপাল দেবনাথ, শুভাশিস বিশ্বাস সাধন, বিপ্লব কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক তাপস কুণ্ডু, সহ-প্রচার সম্পাদক অনয় মুখার্জি, সদস্য সুরঞ্জিত দত্ত লিটু প্রমুখ।
মন্তব্য করুন