বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করছে তা কিছুটা উদ্বেগের আবার কিছুটা হাস্যকর। আমরা বিশ্বাস করি, সাধারণ জনগণ, সাধারণ ছাত্রসমাজ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে সাভারে আশুলিয়ার গণবিদ্যাপীঠ স্কুল মাঠে পাথালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করছে তা কিছুটা উদ্বেগের আবার কিছুটা হাস্যকর। আমরা বিশ্বাস করি- সাধারণ জনগণ, সাধারণ ছাত্রসমাজ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু এ নির্দলীয় সরকারের যারা দায়িত্বে রয়েছে তাদের প্রথম দায়িত্ব ছিল ফ্যাসিস্টদের বিচার করা। আমাদের যত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রয়েছে, সবার প্রধান দায়িত্ব ছিল ছাত্রলীগ, যারা বিগত সময়ে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা।
তিনি আরও বলেন, আপনারা লক্ষ্য করে দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপাচার্যরা এই ছাত্রলীগকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পারেনি। তারা সে ধরনের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাদের তদন্ত প্রতিবেদন এগুলোও তারা প্রকাশ করছে না। এ ফ্যাসিবাদের দোসর যারা ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচন করছে না, এ কারণে এ ধরনের দুঃসাহস দেখায় ছাত্রলীগ। এখন পর্যন্ত সারা দেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারপরও প্রতিবেশী রাষ্ট্রে অবস্থান করে এই ফ্যাসিস্টরা কর্মসূচি দেওয়ার দুঃসাহস দেখায়। আমি আহ্বান জানাচ্ছি নির্দলীয় সরকারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যেন তারা দৃশ্যমানগতভাবে বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে। এ দেশের জনগণের প্রত্যাশা এবং সাধারণ ছাত্রসমাজ এ প্রত্যাশা রাখে।
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, এই নির্দলীয় সরকারের যে প্রশাসনিক কাঠামো সেগুলো সত্যিকার অর্থে অনেক আগেই ভেঙে পড়েছে। এখন পর্যন্ত মেরামত হয়নি। সে কারণে তাদেরও দায় নিতে হবে। আমরা এখনো যদি কোনো অভিযোগ পাই প্রথমে কিন্তু পুলিশকে কল দেই। আমরা বলি, ভাই এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে। আপনারা কী পরিমাণ অবগত রয়েছেন! তখন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় তাদের কাজ করতে অনীহা। এখনো অনেক থানার ওসি রয়েছে, এখনো সাধারণ জনগণের পক্ষে কাজ করতে তাদের অনীহা রয়েছে। তারা এটিকে পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে পালন করছে না। তাদেরও আরও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এই প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও সচল রাখতে হবে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, আমরা তাদের সহযোগিতা করব।
ছাত্রদল ও আগের ফ্যাসিবাদীদের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তারা সরাসরি সন্ত্রাসকে উৎসাহিত করত। তাদের সরাসরি নির্দেশ দেওয়া হতো যে, যারা সন্ত্রাসে এক্সপার্ট তাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা হবে এবং সে ধরনের পেশিশক্তি তাদের প্রদর্শন করতে হবে। আর আমাদের ক্ষেত্রে নম্র, ভদ্র, বিনয়ীদের সামনে নিয়ে আসছি। আপনারা দেখবেন অত্র এলাকার সবচেয়ে ভালো ফ্যামিলির যারা সন্তান, তারাই ছাত্রদল করে। সামান্যতম কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের যদি সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাদের আমরা ছাত্রদলের সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব। তাদের অব্যাহতি দেওয়া হবে।
আওয়ামী-ছাত্রলীগের কর্মসূচি প্রতিহত করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যেমন গত ১৫ বছরে নির্যাতিত হয়েছি তেমনি পরীক্ষিত ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে। পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার অত্যাচার-নির্যাতনসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীদের অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই-সংগ্রাম করেছে তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা এ দেশের শ্রেষ্ঠ নেতৃত্ব। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
এ আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ তমিজ উদ্দিন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবাল।
আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন সুমন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব খন্দকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন শিকদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুরুল হক সুমন, জাহিদুল ইসলাম শাওন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন