গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব আম বয়ানের মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে একদিন আগেই এবার ব্যতিক্রমভাবে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হল।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ। এই পর্বে অংশ গ্রহণ করছেন ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শুরায়ী নেজামের তাবলিগের সাথিরা। ইজতেমা উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মুসল্লিদের সুবিধার্থে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
ইজতেমায় মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, বিগত বছরগুলোতে শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মাধ্যমে ইজতেমা শুরু হলেও এবার মাগরিবের নামাজের পর আম বয়ান হয়েছে। নামাজের পরে ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে এবারের টঙ্গীর ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বয়ানের তরজমা করেছেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের।
তিনি বলেন, আজ শুক্রবার বাদ ফজর বয়ান করছেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়া উল হক। সকাল ১০টায় বিভিন্ন খিত্তায় খিত্তায় তালিমের আমল হবে। দুপুরে অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ। জুমার নামাজ পড়াবেন মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের। ইজতেমায় প্রথম পর্বে অংশগ্রহণের জন্য আগত মুসল্লিরা বিভিন্ন খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান করছেন।
তিনি আরও বলেন, পৌনে ১০ টায় তালিমের আগে মোজাকেরা (আলোচনা) করবেন মাওলানা জামাল সাহেব (ভারত) এছাড়া বিশেষ কিছু সুচি রয়েছে। সকাল ১০ টায় হবে শিক্ষকদের বয়ান। বয়ানের মিম্বারে বয়ান করবেন, ভারতের মাওলানা ফারাহিম। ছাত্রদের সঙ্গে নামাজের মিম্বারে বয়ান করবেন, ভারতের প্রফেসর আব্দুল মান্নান। খাওয়াছদের (গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ) মাঝে টিনশেড মসজিদে বয়ান করবেন, ভারতের মাওলানা আকবর শরিফ। বাদ জুমা বয়ান করবেন, জর্ডানের শেখ উমর খাতিব, বাদ আসর বয়ান করবেন, মাওলানা জুবায়ের, বাদ মাগরিব বয়ান করবেন, ভারতের মাওলানা আহমেদ লাট।
শুরায়ে নেজামের শীর্ষ পর্যায়ের মুরব্বি মাহফুজুল হান্নান বলেন, আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হয়ে গেছে। এবার দুই ধাপে ইজতেমা করায় মুসল্লিদের সুবিধা হয়েছে। রাস্তাঘাটে চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাক আছে।
অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ: টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে বৃহত্তম জুমার নামাজ। এই নামাজে তাবলীগ জামাতের অনুসারী ছাড়াও টঙ্গী ও আশেপাশের এলাকা থেকে মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করবেন। সকাল থেকে তারা দলে দলে আসতে শুরু করেছেন। মহাসড়ক ও আশপাশের এলাকায় ভিড় করছেন তারা।
এদিকে, ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে ১৪টি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে রেলওয়ে। এ ছাড়া মহাসড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এ ছাড়া ইজতেমার নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। পুরো ময়দান ৫টি সেক্টরে ভাগ করে কাজ শুরু করেছে প্রায় ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এবারের ইজতেমা ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শুরায়ী নেজামের অধীনে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
মন্তব্য করুন