রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্প পাস না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রকল্পটি একনেকে প্রেরণের জন্য আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আলটিমেটাম দেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ এর সামনে মহাসড়কের উপরে আয়োজিত মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে এই আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখে সাংবাদিকদের সামনে নিজেদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, তিন মাস ধরে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু পড়াশোনা ছেড়ে আমরা রাজপথে বেশিদিন থাকতে চাই না।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল ২৯ জানুয়ারি প্রকল্পের ডিপিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অবিলম্বে ডিপিপি প্রি-একনেক হয়ে একনেকে প্রেরণের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিপিপি পাসের কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সচিবালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ আইন পাস হওয়ার পর ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় যাত্রার ৯ বছরে পা দিলেও একটি ইটও বসেনি। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থায়ী ক্যাম্পাসে নির্মাণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্দেশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদনের জন্য কেন ৮ বছর সময় নিলেন? এটা কতটা যৌক্তিক? আপনারা সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রকল্পের ডিপিপি দ্রুত একনেকে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, অর্থনীতি বিভাগ প্রথম ব্যাচের ছাত্রী মোমিনা রহমান মালা, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের ছাত্র রায়হান উদ্দিন ও বাংলা বিভাগের ৩য় ব্যাচের শিক্ষার্থী মেরাজ মুন্তাসির।
উল্লেখ্য, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে টানা ১১ দিন ধরে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মহাসড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচিতে শাহজাদপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম হাসান তালুকদার বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। আমাদের ৯ হাজার ২শ কোটি টাকার প্রজেক্ট ছিল সেটা কমিয়ে ৬শ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছি। আমি ইউজিসিকে বলেছি, হয় টাকা দেন নইলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেন। আমরা প্রকল্প তৈরি করে পাঠিয়েছি। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্ল্যানিং কমিশনে যাবে, সেখান থেকে একনেকে পাশ হবে এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ে।
মন্তব্য করুন