চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর প্রতিবেদন ছুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস নামের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ও তার স্বজনদের দাবি, ওই চিকিৎসকের পছন্দের ক্লিনিকে টেস্ট না করায় এমন কাণ্ড করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
রোগীর স্বজন সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার দড়ির হাওলা এলাকার এসকান চৌকিদার মঙ্গলবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে তার স্বজনরা তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস রোগীকে কিছু পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন এবং একটি নির্দিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে সেগুলো করার পরামর্শ দেন। তবে রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের উল্লেখ করা ক্লিনিকে না গিয়ে অন্য আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষাগুলো করান। পরে সেই রিপোর্টগুলো নিয়ে এলে কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস রিপোর্টগুলো দেখবেন না বলে ছুড়ে ফেলে দেন।
এসকান চৌকিদারের ছেলে হেদায়েত বলেন, বাবা হঠাৎ করেই দুপুরে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস কিছু পরীক্ষার নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি পরীক্ষাগুলো একটি নির্দিষ্ট বেসরকারি ক্লিনিক থেকে করানোর কথা বলেন। কিন্তু আমরা আর্থিক সমস্যার কারণে ওই ক্লিনিকে না গিয়ে অন্য একটি ক্লিনিকে পরীক্ষাগুলো করাই। রিপোর্ট নিয়ে আসার পর চিকিৎসক সেগুলো দেখতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ছুড়ে ফেলে দেন এবং আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
চিকিৎসাসেবা নিতে আসা লিখন নামের এক ব্যক্তি বলেন, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট ক্লিনিকে পরীক্ষার অনুরোধ নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। পরীক্ষাগুলো অন্য কোথাও করালে অনেক সময় চিকিৎসকরা রিপোর্ট গ্রহণ করেন না। এমন পরিস্থিতিতে দরিদ্র ও সাধারণ রোগীদের জন্য চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা চাই, চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে এমন হয়রানি বন্ধ হোক এবং সবার জন্য সঠিক ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হোক।
যদিও এ বিষয়ে সরাসরি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি অভিযুক্ত চিকিৎসক কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস। তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে অভিযোগটি অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. আকরাম এলাহী কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি শুনে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এখানে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। চিকিৎসাসেবায় কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। রোগীদের সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব এবং সেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করব।
মন্তব্য করুন