ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ঘোষণা দিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে কৃষক লীগ নেতা নজরুল শেখের বিরুদ্ধে। এ সময় ভুক্তভোগীর বাড়ি ভাঙচুরসহ দুজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
জানা গেছে, বুধবার সকাল ৬টায় কুচিয়াগ্রাম বটতলা বাজারের পাশে গোপালপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের নেতা নজরুল শেখের লোকজন ঢাল, সরকি, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিপুল শেখ (৫০) এর ওপর হামলা করে। এ সময় বিপুলের পা কেটে নেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। চিৎকারে বিপুলের স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে বিপুলের বাড়িঘর ভেঙে দেন তারা। এ সময় বিপুল ও তার স্ত্রীসহ আহত হন ময়েন মোল্যা ও সুমন শেখ নামে দুজন।
গুরুতর আহত বিপুল ও তার স্ত্রীকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহতদের আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, রুবেল শেখের সঙ্গে একই গ্রামের সিদ্দিক শেখের জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে বিরোধপূর্ণ জমি সার্ভেয়ার পরিদর্শন করেন। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। তখন নজরুল শেখ ঘোষণা দেন- ‘বুধবার সকালে কাইয্যা হবে, তুরা রেডি থাকিস।’ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
আহত বিপুল শেখের দলনেতা উজ্জ্বল শেখ বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। মঙ্গলবার সকালে আমাদের দলের রুবেল শেখের জমি মাপতে সার্ভেয়ার এসেছিল। সেখানে নজরুল শেখ সবার সামনে আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের হুমকি দেয়। বুধবার সকালে নজরুল শেখের নেতৃত্বে তার দলের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের দলের তিনজনকে আহত করে। এরমধ্যে গুরুতর আহত বিপুলের পা কুপিয়ে বিচ্ছন্ন করে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। তাকে ও তার স্ত্রীকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিপুলের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। আমাদের দলের লোকজনের বাড়িঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নজরুল শেখ বলেন, রুবেল শেখের সঙ্গে আমার দলের সমর্থক সিদ্দিক শেখের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ওই জমি মঙ্গলবার সকালে সার্ভেয়ার মাপতে আসেন। তখন আমাদের লোকজনকে বিপুল শেখ মারধর করার হুমকি দেয়। বুধবার সকালে বিপুল শেখসহ তাদের গ্রুপের লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করে। এতে সুজন শেখ নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন হারুন অর রশিদ জানান, সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান। জমিজমা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়েছে।
মন্তব্য করুন