নোয়াখালীতে বিক্রির জন্য আটকে রাখা খাঁচাবন্দি ৫৪টি শালিক-টিয়া-ঘুঘু পাখি জব্দ করেছে উপকূলীয় বন বিভাগ। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে মাইজদী বাজারে পাখিগুলো অবমুক্ত করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নোয়াখালীর সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় পাখি শিকারিরা বিক্রির জন্য আটকে রাখা খাঁচাবন্দি ৫৪টি শালিক-টিয়া-ঘুঘু পাখি জব্দ করে উপকূলীয় বন বিভাগ। পাখিগুলো খাঁচাবন্দি থাকায় কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর উপকূলীয় বন বিভাগের পরিচর্যা ও খাদ্য সরবরাহের পর সুস্থ হলে পাখিগুলো বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় চত্বরের সামনে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়।
এক শ্রেণির পাখি শিকারিরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে সুবর্ণচর ও সদর উপজেলায় ফাঁদ পেতে অহরহ পাখি শিকার করে চলছে। তাদের হাত থেকে সুদুর সাইবেরিয়া থেকে আগত পাখিগুলোও রেহাই পাচ্ছে না। এ ব্যাপারে বন বিভাগের কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
পাখি আটকে রাখার বিয়য়টি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পাখির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বন্যপাখি যেন বিলুপ্ত না হয় সেই লক্ষ্যে উপকূলীয় বন বিভাগের এ ধরনের অভিযান চলামান থাকবে। বন্যপাখি ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণ বন্ধের জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এ সময় বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিলসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডও হতে পারে। একই অপরাধ ফের করলে শাস্তি ও জরিমানা দ্বিগুণের বিধানও রয়েছে।
পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এছাড়া কোনো ব্যক্তি পরিযায়ী পাখির মাংস ও দেহের অংশগ্রহণ বা দখলে রাখলে অথবা বেচা-কেনা করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
মন্তব্য করুন