যশোরের মনিরামপুরে একটি স্কুলে বালু রাখতে নিষেধ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মৌসুমী সুলতানা নামে এক সহকারী শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়ে হাতুড়িপেটা করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয়, এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্বামী ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম ও ভাশুর হাফিজুর রহমানকেও হাতুড়িপেটা করা হয়েছে।
পরে আহত শিক্ষিকাসহ তিনজনকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের রামনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে।
রামনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুনসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় ট্রলিচালক হারুন অর রশিদ ও তার লোকজন এক ট্রাক বালু এনে স্কুলের প্রধান ফটকসহ ভেতরে স্তূপ করে রাখে। ফলে স্কুলে যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হয়। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা বালু সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলেন।
এক পর্যায়ে হারুন ও তার লোকজন বালু সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে সকাল সাড়ে ১০টা গড়িয়ে গেলেও বালু না সরিয়ে টালবাহানা শুরু করে তারা। এ নিয়ে সহকারী শিক্ষক মৌসুমী সুলতানার সঙ্গে হারুনের কথা কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে মৌসুমী সুলতানার স্বামী স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম স্কুলে এসে তাদের বালু সরাতে বলেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হারুন অর রশিদ, আব্দুর রহমানসহ তিনজন মিলে ইউপি সদস্য রবিউলের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে ট্রলির বাক্স থেকে হাতুড়ি নিয়ে রবিউলকে হাতুড়িপেটা করে মাথা ফাটিয়ে দেয় তারা। এ সময় মৌসুমী সুলতানা স্বামীকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে তাকেও হাতুড়িপেটা করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়।
সহকারী শিক্ষক আবদুল লতিফ জানান, স্কুল চলাকালে নৃশংস এ হামলার সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এরপর বেলা ১১টার দিকে মাঠে যাচ্ছিলেন রবিউলের ভাই কৃষক হাফিজুর রহমান।
অভিযোগ রয়েছে, হারুন ও তার লোকজন এ সময় হাফিজুরের ওপর হামলা চালিয়ে হাতুড়িপেটা করে তারও মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা আহত তিনজনকে উদ্ধারের পর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
খবর পেয়ে দুপুরের দিকে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আফজাল উর রহমান স্কুল পরিদর্শন করেন। তিনি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রধান শিক্ষককে সন্ত্রাসীদের নামে মামলা করার নির্দেশ দেন।
মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী কালবেলাকে জানান, হামলার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন