রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর সচল হয়েছে ট্রেন যোগাযোগ। শিডিউল বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ট্রেন। প্রতিটা ট্রেন গড়ে এক থেকে তিন ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোর ৬টার ঢাকাগামী চট্টলা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটি বিলম্বে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে, সুবর্ণ এক্সপ্রেস সাড়ে ৭টার পরিবর্তে এক ঘণ্টা বিলম্বে সাড়ে ৮টায়, সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা বিলম্বে ৮টা ৫০মিনিটে, চাঁদপুরগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় এক ঘণ্টা ৩৫ মিনিট বিলম্বে ৯টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে যায়।
৩১ ঘণ্টা পর রাজশাহী থেকেও ট্রেন ছেড়েছে। এ ছাড়া জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস দেড় ঘণ্টা বিলম্বে সকাল সাড়ে ১০টায় ছাড়ে। সবচেয়ে বেশি বিলম্ব হয়েছে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনের ক্ষেত্রে। ট্রেনটি সকাল ৭টায় ছাড়ার কথা থাকলেও প্রায় তিন ঘণ্টা ৫ মিনিট বিলম্বে ১০টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়।
তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে সূত্র।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘কয়েকটা ট্রেন বিলম্বিত সময়ে ছেড়ে গেছে। তবে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করি সব ট্রেন যথাসময়ে চলবে।’
এর আগে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মধ্যরাতের পর সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়ে। এর প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভ করে যাত্রীরা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দিনভর শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের দফায় দফায় বৈঠক হয়। পরে মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হাসনাত আব্দুল্লাহ ও বিএনপির প্রতিনিধি শিমুল বিশ্বাসের মধ্যস্থতায় রেল উপদেষ্টার বাসায় আবারও শুরু হয় বৈঠক। বৈঠকে শ্রমিক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে রেল উপদেষ্টা শ্রমিকদের কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, রেলওয়ের রানিং স্টাফদের সুবিধার বিষয়ে কথা হয়েছে। এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় কিছু সুবিধার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। তবে এরপরও রেলওয়ের রানিং স্টাফদের আরও কিছু দাবি রয়েছে। বিশেষ করে মাইলেজের সুবিধা এক মাসের বেশি হতে পারবে না।
রেল উপদেষ্টার এমন আশ্বাসে রাত থেকেই রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতা মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, যাত্রীদের এমন দুর্ভোগ আমরা চাই না। বাধ্য হয়ে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। স্টাফ ভাইদের বলব, তারা যেন নিজ নিজ দায়িত্বে ফিরে যায়।
মন্তব্য করুন