শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩২
মহিন উদ্দিন রিপন, টঙ্গী (গাজীপুর)
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কঠোর নিরাপত্তায় ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু শুক্রবার

ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন আইজিপি বাহারুল আলম। ছবি : কালবেলা
ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন আইজিপি বাহারুল আলম। ছবি : কালবেলা

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আগামী শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজামের অধীনে ছয় দিনব্যাপী এই ইজতেমা হবে দুই পর্বে। এ উপলক্ষে ইজতেমার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

এবারের ইজতেমাকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি), জেলা প্রশাসন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে ইজতেমা ময়দানে সুবিশাল চটের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। ময়দানের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে বিদেশি মেহমানদের জন্য টিনের ছাউনিযুক্ত পৃথক কামরা তৈরি করা হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের নিবাসটি বিশেষ নিরাপত্তা ও নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে।

এদিকে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি। সম্প্রতি যেসব সংঘর্ষ হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’

জিএমপির কমিশনার ড. নাজমুল করীম খান জানিয়েছেন, এবারের ইজতেমায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ১৬টি ওয়াচ টাওয়ার, ২০টি মোবাইল টিম ও ২০টি চেকপোস্ট থাকবে। পুরো ইজতেমা মাঠ সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি ড্রোন ও হেলিকপ্টার টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, এবারের ইজতেমা হজরত ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শূরায়ী নেজামের অধীনে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি, ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। বিরতিহীনভাবে দ্বিতীয় পর্ব ৩, ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য পুরো ৬৪টি জেলাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। কোন জেলা কোন পর্বে অংশগ্রহণ করবে, তা এরই মধ্যে জেলাওয়ারি মুরব্বিদের জানানো হয়েছে।

হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, ৩১ জানুয়ারি শুরু হওয়া ইজতেমার প্রথম পর্বে অংশগ্রহণ করছেন গাজীপুর, টঙ্গী, ধামরাই, গাইবান্ধা, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, কাকরাইল, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড় ও রাজবাড়ী জেলা। এ পর্বে ঢাকার মিরপুর, কাকরাইল ও ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১টি জেলার মুসল্লিরা।

দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করবে মুন্সীগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা, নরসিংদী, সাভার, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নওগাঁ ও বান্দরবন জেলা। এ পর্বে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, মোহাম্মাদপুর, ঢাকার একাংশসহ ২২টি জেলার মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করবেন।

মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান আরও জানান, ইজতেমা আয়োজনের জন্য মাঠ এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই প্রথম পর্বে ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন খিত্তা ও পয়েন্টের জিম্মাদাররা দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।

ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের পারাপারের জন্য তুরাগ নদের ওপর সেনাবাহিনী ৫টি এবং বিআইডব্লিউটিএ একটি অস্থায়ী পল্টুন ব্রিজ নির্মাণ করেছে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে এবারও গাজীপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, জেলা সিভিল সার্জন, সিটি করপোরেশন, ডেসকো, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সমন্বয় করে ইজতেমা ময়দানের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ ছাড়া ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের ওজু, গোসলের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ, রান্নার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে দেওয়া হয়েছে।

মুসল্লিদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে অতিরিক্ত শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ইজতেমা ময়দানের পাশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও সেবা সংস্থা বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার জন্য অর্ধশতাধিক ক্যাম্প স্থাপন করেছে।

অন্যদিকে মাওলানা সাদ অনুসারীদের ইজতেমা আগামী ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন জিএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ) নুর মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্তের আলোকেই সাদ অনুসারীরা ওই সময়ে ইজতেমায় যোগ দেবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নরসিংদীতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ইউপি সদস্য আহত

চাপের মুখে হাতকড়া পরলেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী

রাজবাড়ী জেলা বারের সভাপতি বাচ্চু, সম্পাদক রাজ্জাক

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নামে মিয়ানমারের ভিডিও প্রচার

মেঘনা নদীতে দুগ্রুপের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ২

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন

বনের জমি উদ্ধার করতে গিয়ে আহত ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারী

ভারতে পাচার ১৬ কিশোর-কিশোরীকে বেনাপোলে হস্তান্তর

গাউসুল আজম মার্কেটে অস্থিরতার চেষ্টা, অভিযোগ ব্যবসায়ীদের

বিশ্ব ইজতেমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানাল র‍্যাব

১০

অসম্মান-মানসিক চাপে বিদ্রোহের সুর, কাঁদলেন নারী ফুটবলাররা

১১

আন্দোলনের মুখে পঞ্চগড়ের চার বিচারকের বদলি

১২

ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করতে কমিটি

১৩

জায়গার মালিকানা নিয়ে হামলা, নারীসহ আহত ৫

১৪

জমি নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

১৫

কবরস্থানের সীমানা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১

১৬

বাংলাদেশে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জাপানের 

১৭

শরিফুলের আগুন বোলিংয়ে চিটাগাংয়ের বড় জয়

১৮

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার অজানা তথ্য জানালেন ড. ইউনূস

১৯

পালানোর সময় বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতা

২০
X