জঙ্গলে হাত-পা বাঁধা ছবি স্ত্রীর মোবাইল ফোনে পাঠিয়ে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানান মোহাম্মদ ইদ্রিস। মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা না দিলে অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করবেন বলে হুমকিও দেন।
পরে পরিবারের সদস্যরা দফারফা করে মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন। একই সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়।
টানা ৩ দিনের বিশেষ অভিযানে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ জানতে পারে, তিনি নিজেই সাজিয়েছিলেন এ অপহরণের নাটক।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের কাপ্তাই ওয়াসা মোহরার বালুর টাল এলাকা থেকে ইদ্রিসকে উদ্ধার করে পেকুয়া থানা পুলিশ।
ঘটনাটি চট্টগ্রাম নগরীতে ঘটলেও ইদ্রিসের বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি মৌলভিপাড়া এলাকায়। তিনি মালয়েশিয়ার একজন প্রবাসী।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে পেকুয়ার টৈটং বাজার থেকে আত্মগোপনে চলে যান ইদ্রিস। এরপর তার স্ত্রীকে ফোন করে অপহৃত হওয়ার কথা জানান। স্ত্রীকে জানান, ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। নইলে অপহরণকারীরা তাকে মেরে ফেলবে। পরে পরিবারের সদস্যরা দফারফা করে মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন। একই সঙ্গে বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়। এরপর থেকে তাকে উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ।
পুলিশ প্রথমে ইদ্রিসের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান জানতে পেরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। তবে ইদ্রিসের সন্ধান না পেয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ইদ্রিসের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে— এমন একজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করে। ওই ব্যক্তি তার ভায়রা নবি হোছেন। নবি হোসেনকে চট্টগ্রাম নগর থেকে আটকের পরে তার সহায়তায় ইদ্রিসের সন্ধান পায় পুলিশ। অপহরণ নাটকের বিষয়টি নবি হোসেনকে আগেই জানিয়েছিলেন ইদ্রিস।
উদ্ধারের পর ইদ্রিস নিজ মুখে অপহরণটি তার সাজানো ছিল বলে শিকার করেন। তিনি জানান, মূলত ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় অপহরণের নাটক সাজান তিনি নিজেই। বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তার তিন লাখ টাকার মতো ঋণ রয়েছে। এ টাকা পরিশোধ করার প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া বেশি টাকা আদায় করতে পারলে তা দিয়ে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল তার।
ইদ্রিস আরও বলেন, দোকান থেকে রশি কিনে অন্য একজনের সহায়তায় নিজের হাত-পা বেঁধে ছবিটি স্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। ঘটনাটি এত বড় হবে ভাবিনি। এখন আমি অনুতপ্ত।
পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা কালবেলাকে বলেন, ইদ্রিসকে আজ বুধবার দুপুরে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে। তার বিষয়ে আদালত যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন