ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আইপিএলের জুয়ার বলি হলেন দিপালী রানী পাল নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মা। স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছেলে অনিল পাল ধার দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়ায় অভিমানে বিষপানে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন দিপালী রানী।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদি ইউনিয়নের মনসুরাবাদ গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত দিপালী রানী পাল মনসুরাবাদ গ্রামের নিরঞ্জন চন্দ্র পালের স্ত্রী।
এলাকাবাসী জানায়, দিপালী ও নিরঞ্জন দম্পতির এক ছেলে ও তিন মেয়ে। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলে অনিলও বিবাহিত। তার সংসারে চার বছরের মেয়ে ও এক বছরের একটি ছেলে রয়েছে। ছেলে অনিলকে স্বর্ণের কারিগর হিসেবে ব্যবসায় দেন। সুখের সংসার ভালোই কাটতে ছিল কিছুদিন। বাবা মায়ের অজান্তে ছেলে অনিল আইপিএলের জুয়ায় জড়িয়ে পড়ে। একে একে ২০/৩০ লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এরপর ছেলে অনিল স্বর্ণের ব্যবসায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে তিনি ভাঙ্গায় একটি স্বর্ণের দোকানে কারিগর হিসেবে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে।
তারা আরও জানান, ছেলের দেনার টাকা পরিশোধ করার মতো কোনো সম্পদ নাই অনিলের মা-বাবার। কোনোরকম একটি কুঁড়োঘর এক টুকরো জমিতেই তাদের বসবাস। দেনাদাররা ছেলের কাছে প্রতিনিয়ত টাকার জন্য চাপ দেয়। ছেলের কষ্টে ও অভিমানে মা দিপালী সোমবার সকালে বিষ পান করে। স্থানীয়রা দিপালীকে প্রথমে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে পাঠান চিকিৎসকরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর বলেন, ছেলেটি খুবই ভদ্র, কিন্তু কীভাবে যে আইপিএলের জুয়ায় জড়িয়ে পড়ে ভাবতে পারিনি। সে অনেক দেনাদার হয়ে গেছে, সেই কারণেই অনিলের মা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
ভাঙ্গা থানার ওসি মোকছেদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, দিপালী রানী পাল নামের এক মহিলা বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন। এ বিষয়ে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে কী কারণে বিষ পান করেছে বিষয়টি তদন্ত করে জানা যাবে।
মন্তব্য করুন